পাবনার ঈশ্বরদীর রসালো লিচুর সুখ্যাতি রয়েছে দেশজুড়ে। প্রতি বছর বৈশাখের শেষ সপ্তাহে ঈশ্বরদীসহ পাবনার বিভিন্ন বাজারে দেশি (মোজাফ্ফর) জাতের লিচু পাওয়া যায়। এবারও জেলা শহরসহ গ্রামের বিভিন্ন হাটবাজারে দেশি লিচু বেচাকেনা শুরু হয়েছে। তবে এ লিচু অপরিপক্ব, স্বাদহীন ও টক। ফলে লিচুর আসল স্বাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ভোক্তারা।
বেশি লাভের আশায় বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা অপরিপক্ব এসব লিচু বাজারে বিক্রি করছেন। ক্রেতারাও এসব অপরিপক্ব লিচু চড়া দামে কিনছেনও। অপরিপক্ব এসব লিচু স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। প্রতি ১০০ পিস লিচু ২৫০-৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে অন্যবারের তুলনায় এবার লিচু আকারে ছোট ও স্বাদে টক।
পাবনা শহরের বিভিন্ন স্থানে মৌসুমী ফল ব্যবসায়ীরা দেশি জাতের লিচু বেচাকেনা করছেন। এসব লিচু আকারে ছোট ও অপরিপক্ব।
প্রায় এক সপ্তাহ ধরে জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে লিচু বেচাকেনা শুরু হয়েছে। এখন দেশি লিচু (মোজাফ্ফর) বেচাকেনা হচ্ছে। বোম্বাই ও চায়না থ্রি লিচু বাজারে না ওঠা পর্যন্ত লিচু বেচাকেনা জমবে না। বোম্বাই ও চায়না থ্রি লিচু বাজারে আসতে এখনো ১৫-২০ দিন সময় লাগবে।
মানিকনগর গ্রামের লিচু চাষি আসাদুল ইসলাম বলেন, এবার ঈশ্বরদীতে শতকরা ১০-২০ ভাগ গাছে লিচু ধরেছে। অতীতে কখনো লিচুর এমন ফলন বিপর্যয় দেখা যায়নি। জ্যৈষ্ঠ মাসের মাঝামাঝিতে বোম্বাই লিচু বাজারে উঠবে। এখন যেসব লিচু বাজারে দেখা যাচ্ছে এগুলো দেশি লিচু (আঁটি লিচু) হিসেবে পরিচিত। এসব লিচুর গুণগত মান খুব বেশি উন্নত না এবং সুস্বাদু রসালোও না।
লিচু বিক্রেতা হাবিবুর রহমান বলেন, ৫ দিন ধরে এখানে লিচু বিক্রি করছি। ১০০ লিচু ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে নতুন ফল হিসেবে অনেকেই কিনছে।
জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত লিচুচাষি আব্দুল জলিল কিতাব বলেন, আমার ৪৫ বছরের লিচু চাষের ইতিহাসে এমন ফলন বিপর্যয় দেখিনি। এখন বাজারে দেশি লিচু উঠতে শুরু করেছে। দুই সপ্তাহ পরে বোম্বাই লিচু উঠবে। অন্য বছর এসময় দেশি লিচুর বেচাকেনা জমজমাট হয়ে ওঠে। এবার লিচুর ফলন খুব কম, সেজন্য বেচাকেনা তেমন দেখা যাচ্ছে না।
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকার জানান, জলবায়ু পরিবর্তন, বৈরি আবহাওয়া ও পরাগায়নের জটিলতার কারণে এবার লিচুর ফলন অন্যবারের তুলনায় কম। এখন বাজারে দেশি জাতের (মোফাজ্জর জাতের) লিচু উঠতে শুরু করেছে। বোম্বাই লিচু বাজারে আসতে আরও দুই সপ্তাহের মতো সময় লাগবে।

0 মন্তব্যসমূহ