সর্বশেষ

6/recent/ticker-posts

পাবনায় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় ১২ নেতাকর্মী কারাগারে

 


বিএনপির দুইগ্রুপের সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় একটি মামলার জামিন নিতে গেলে ১২ জন নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। পাবনা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের (আমলি আদালত-২) বিচারক মো. মোস্তাফিজুর রহমান এ আদেশ দেন।

পাবনার সুজানগরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ৯ জুলাই সুজানগর পৌর বাজারের নন্দিতা সিনেমা হলের সামনে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি সেলিম রেজা হাবিব গ্রুপের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ সময় বিএনপির সদস্য সচিব শেখ আব্দুর রউফসহ ১৫/২০ নেতাকর্মী আহত হন। এদের মধ্যে শেখ আব্দুর রউফকে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় শুক্রবার (১১ জুলাই) রাতে গুরুতর আহত সুজানগর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব শেখ আব্দুর রউফের ছেলে আদনানুর রউফ রুদ্র বাদী হয়ে সুজানগর পৌর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান খাঁকে প্রধান আসামি করে ২৩ জনের নামে মামলা দায়ের করেন। মামলায় সুজানগর হাসপাতাল পাড়ার আলতু খার ছেলে নয়ন খা গ্রেপ্তার হন। তিনি বিএনপি কর্মী বলে জানা গেছে। এ ছাড়া চর ভবানীপুরের আব্দুর রশিদের স্ত্রী কাজলী খাতুন বাদী হয়ে সুজানগর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব শেখ আব্দুর রউফকে প্রধান আসামি করে ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার আজকে জামিন নিতে গিয়ে এমন ঘটনা ঘটেছে।

আরও জানা গেছে, এ ঘটনার অবৈধ অস্ত্র হাতে কয়েকজন নেতাকর্মীদের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। গুরুতর আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি থাকা বিএনপির সদস্য সচিব শেখ আব্দুর রউফ সুজানগর পৌর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান খাঁসহ ১০ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ঘটনা তদন্ত করতে শুক্রবার তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল সুজানগরে এসে তথ্য সরবরাহ করেন। হামলার ছবি-ভিডিও সংগ্রহ করেন। এ ছাড়া আগ্নেয়াস্ত্রের ভাইরাল হওয়া ছবিও সংগ্রহ করেন প্রতিনিধিদল। পরে থানায় জড়িতদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়ে যান। এ সময় শক্তভাবে নিরপেক্ষভাবে ভয়ছাড়া প্রকৃত জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনকে বলেন। 

যাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে— সুজানগর উপজেলার ক্রোরদুলিয়ার আব্দুস সবুরের ছেলে ও তাতিবন্ধ ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি গোলাম আজম (৫২), ভবানীপুরের হাসু শেখের ছেলে মো. ফারুক শেখ (৩৫), কামারদুলিয়া গ্রামের মন্টু মাস্টারের ছেলে রুহুল আমিন (৩৭), ভবানিপুরের ওমর কসাইয়ের ছেলে জাবেদ (৩২), ক্রোড়কদুলিয়ার হাসেন খাঁর ছেলে রঞ্জু খাঁ (৩২), কোড়দুলিয়ার শিতল আলীর ছেলে আইযুব আলী (৩২), উদয়পুর গ্রামের ময়েন বিশ্বাসের ছেলে রাজ্জাক বিশ্বাস (৪২), মজিবর বিশ্বাসের ছেলে  হাসু বিশ্বাস (২৮), চন্ডিপুরের বছির শেখের ছেলে বিল্লাল শেখ (৩২), ক্রোড়দুলিয়ার মন্টু মাস্টারের ছেলে শরিফুল ইসলাম (২৮), মধুপুর গ্রামের ইউসুফ আলী খানের ছেলে সাবেক ইউপি সদস্য মজিবর রহমান খান (৪৭), কামারদুলিয়ার মন্টু মাস্টারের ছেলে সাইফুল ইসলাম (২৮)। এরা  বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সদস্য সচিব শেখ আব্দুর রউফের অনুসারী বলে জানা গেছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, দুপুরের দিকে পাবনা জেলা বিএনপিরর সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাসুদ খন্দকারের মাধ্যমে কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনের অনুসারী সুজানগর উপজেলা বিএনপি সদস্য সচিব শেখ আব্দুর রউফসহ তার অনুগত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা মামলায় রউফ শেখ ছাড়া বাকি নেতাকর্মীদের চিফ জুডিশিয়াল মেজিস্ট্রেট কোর্টের (আমলি আদালত-২)-এর বিচারক মো. মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে জামিন আবেদন করা হয়। ৩৩ জন আসামির মধ্যে প্রথমে ১৩ জনকে আদালতে তোলা হয়। পরিস্থিতি বুঝে বাকিদের আদালতে তোলার পরিকল্পনা থাকে। ১৩ জনের মধ্যে একজন শিক্ষার্থীর পরীক্ষা থাকায় জামিন মঞ্জুর করা হয়। বাকিদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাবনা জেলা কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এ সময় বাকি নেতাকর্মীরা পরিস্থিতি বেগতিক দেখে দ্রুত সটকে পড়েন।

জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাসুদ খন্দকার বলেন, প্রথমে ১৩ জনের জামিন ধরা হয়েছিল। ১২ জনকে জামিন নামঞ্জুর করে পাবনা কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়। এই মামলা জামিনযেগ্য। পরবর্তীতে জামিন ধরলে জামিন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

বেড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ বলেন, উভয়পক্ষ পৃথকভাবে দুটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলা দুটি গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করছে পুলিশ। নিরপেক্ষভাবে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়টি নিয়েও পুলিশ কাজ করছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ