সর্বশেষ

6/recent/ticker-posts

পাবনায় পত্রিকা বিক্রি করে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টায় শিক্ষিত যুবক মামুন



মনসুর আলম খোকন, সাঁথিয়া, পাবনা: লাখ লাখ বেকার যুবকেরা প্রতিনিয়ত ছুটে চলছে চাকরির পেছনে। সেখানে ব্যতিক্রমি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে মামুন হোসেন নামের যুবক। 


মোঃ মামুন হোসেন পাবনার সদর উপজেলার চরতারাপুর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড দোকদারপাড়া গ্রামের মৃত খালেক বিশ্বাসের ছেলে। দুই ভাই, এক বোনের মধ্যে মামুন বড়। তার এসএসসি পরীক্ষার পূর্বেই তার বাবা মারা যায়। ছোটবেলা থেকেই মামুন খুবই পরিশ্রমি ছেলে। সাংসারিক কাজসহ বাবার মাঠের কাজেও সহযোগিতা করতো সে। 


তার বাবার মৃত্যুর পর সে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়া অবস্থায় ২০২১ সালের মার্চ মাসে সাঁথিয়ার বনগ্রাম বাজারে খন্দকার পত্রিকা বিতাণের সাঁথিয়া উপজেলার পত্রিকা পরিবেশক হিসেবে কাজে যোগদান করে।  কঠোর পরিশ্রম, অদম্য ইচ্ছে শক্তি, কাজের প্রতি ভলোবাসা দেখে জাতীয় দৈনিক আজকের পত্রিকার সার্কুলেশন ম্যানেজার তাকে ১৫ কপি পত্রিকার এজেন্ট দেয়। 


চাকরি নয়, আত্মকর্মসংস্থানের প্রতি উদ্বুদ্ধ হয়ে, ঝুঁকি নিয়ে সে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে সেই ১৫ কপি  পত্রিকা নিয়ে কাজ শুরু করে। আস্তে আস্তে তার কথায়, সেবার মানে পাঠকের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। পাঠকের চাহিদার কথা ভেবে এজেন্সি করার জন্য বিভিন্ন অফিসে যোগাযোগ শুরু করে। কিন্তু এজেন্সি পাওয়াটা খুব সহজ ছিল না। অনেক চরাই উতরাই পার করতে হয়েছে তাকে। 


অনেক সময় পত্রিকা অফিসে যোগাযোগ করলে তারা বলেছেন, এখন এজেন্ট দেয়া হবে না, নতুন এজেন্ট দিবনা। তবুও হাল ছাড়েনি সে। আবার অনেকেই তরুণ পরিশ্রমি ভেবে এজেন্সি দিয়ে দেয়। ধীরে ধীরে দৈনিক আমার সংবাদ, নয়া শতাব্দী, সমকাল, ভোরের ডাক, ভোরের কাগজ, আমাদের সময়, যুগান্তর, কালবেলা, আলোকিত বাংলাদেশ, সংগ্রাম, নয়া দিগন্ত, সংবাদ, জনকণ্ঠ, সময়ের আলো, প্রতিদিনের বাংলাদেশ, মানবজমিনসহ সাপ্তাহিক সোনার বাংলা, চাকরির বিজ্ঞাপন, চাকরির সংবাদ, চাকরির ডাক ও মাসিক মদিনার এজেন্ট হয়ে যায়। 


সব দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক পত্রিকা মিলে এখন তার পাঠক, গ্রাহকের সংখ্যা সহস্রাধিক। মামুন হোসেন জানায়, পাঠকের সেবা ও চাহিদাটাই আমার কাছে মুখ্য বিষয়।  পাঠকের চাহিদার কথা মাথায় রেখে দৈনিক প্রথম আলো ও বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার এজেন্সি পেলে আমি আরও ভালোভাবে পাঠকের সেবা দিতে পারতাম। এ দুটি পত্রিকা আমার না থাকায় পাঠকের মনের মতো সেবা দেওয়া একটু বিঘ্ন ঘটছে। যেহেতু এ দুটো ছাড়া বাকি সকল প্রায় পত্রিকার এজেন্সি পেয়েছি। এই দুটি পত্রিকার এজেন্সিও খুব শীঘ্রই পাবো ইনশাল্লাহ। 


মামুন হোসেন আরও জানায়, প্রতিটা মানুষেরই নিজের বলার মতো একটি গল্প থাকতে হবে। আর এই গল্পটা তৈরির জন্য আমি এই কাজটা সাহস করে শুরু করি। শীতের কুয়াশা, তীব্র রোদ, ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে কাজটাকে ভালোবেসে লেগে আছি। সাফল্য আসবেই ইনশাল্লাহ। 


সাঁথিয়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আ: হাই বলেন, শিক্ষিত যুবক মামুন চাকরির পেছনে না ছু্টে সংবাদপত্র বিক্রি শুরু করে এখন ধীরে ধীরে সে নিজেই পত্রিকার এজেন্ট হয়ে গেছে। আমি প্রথমদিকে তাকে এ ব্যাপারে উৎসাহ ও সহযোগিতা করেছি। আমি তার সাফল্য কামনা করছি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ