।। মনসুর আলম খোকন।।
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থানার জামিরতা ভাদুড়ী জমিদারবাড়ি। পোরজনার প্রখ্যাত জমিদার রামগোপাল ভাদুড়ীর কনিষ্ঠ পুত্র রত্নগোপাল ভাদুড়ীর দুই পুত্র জগবন্ধু ও দীনবন্ধু ভাদুড়ী পোরজনার নিকটবর্তী জামিরতা গ্রাম পত্তনি নিয়ে সেখানে বসবাস করেছিলেন। রাধারমণ সাহার 'পাবনা জেলার ইতিহাস' গ্রন্থে বর্ণিত আছে, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের পোরজনার ভাদুড়ী জমিদারগণ "কুসুমাঞ্জলি” গ্রন্থ প্রণেতা উদয়নাচার্য ভাদুড়ীর বংশধর বলে পরিচয় দিয়ে থাকেন। ওই ভাদুড়ীর পুত্র পূর্বনিবাস রাজশাহী জেলার বিন্নাদইর গ্রাম পরিত্যাগপূর্বক ঢাকা জেলার বালিয়াটি গ্রামে বাস করেন। তাঁরই বংশধর ধনঞ্জয় ভাদুড়ী সে বাসস্থান পরিত্যাগপূর্বক শাহজাদপুরের পোরজনা গ্রামে বসতি গড়েছিলেন।
বসতি স্থাপনের পর দুই জমিদার ভ্রাতা জগবন্ধু ভাদুড়ী ও দীনবন্ধু ভাদুড়ী তাঁদের নিজস্ব ভূমিতে জামিরতা গ্রামে হাট,বাজার স্থাপন করেন। প্রজাদের জলকষ্ট দূরীকরণে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুকুর খনন করেছিলেন। এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে ১৯০০ সালে তাঁদের নিজস্ব ভূমিতে জামিরতা হাই স্কুল ও জামিরতা প্রাইমারি স্কুল নামে দুটি পৃথক শিক্ষালয় স্থাপন করেন। এর ২০ বছর আগে এই পরিবারের আরেক গূণী জমিদার মুকুন্দনাথ ভাদুড়ী ১৮৮০ সালে পোরজনা গ্রামে উচ্চ বিদ্যালয় স্থাপন করেন। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর তাঁদের বংশধররা ভারত চলে যান। জামিরতা গ্রামে এখনো দুটি বাড়িতে ভাদুড়ী জমিদারদের দুটি দালান কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
পরবর্তীতে ১৯৭৩ সালে জামিরতা গ্রামে একটি কলেজ স্থাপিত হয়েছে। জামিরতা গরুর হাটের জন্য নামকরা। সেখানে সপ্তাহে ছয়দিন গরু বেচাকেনা হয়।
লেখক: শিক্ষক ও সাংবাদিক।
monsurph@gmail.com
0 মন্তব্যসমূহ