সর্বশেষ

6/recent/ticker-posts

রক্তাক্ত সংঘাতের তদন্তে বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল সুজানগরে


মোবাইলে কথা বলাকে কেন্দ্র করে পাবনার সুজানগরে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলিতে ১৫ জন আহতের ঘটনা তদন্ত করতে ঘটনাস্থলে এসেছেন তিন সদস্যের বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতিনিধি দল।

শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকেলে পাবনার সুজানগর উপজেলায় এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন তারা। এছাড়াও সাধারণ জনগণের থেকে তথ্য সংগ্রহ করেন। এর আগে গত বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে সুজানগর বাজারের নন্দিতা সিনেমা হলের সামনে দুইগ্রুপের সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।

তিন সদস্যের প্রতিনিধিরা হলেন- রাজশাহী বিভাগীয় বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম আলিম, ওবায়দুর রহমান চন্দন, বিএনপির তথ্য সেলের সদস্য মাহবুবুর রহমান। 

পরিদর্শন ও তদন্ত শেষে রাজশাহী বিভাগীয় বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম আলিম বলেন, পত্রপত্রিকার মাধ্যমে আপনারা জানতে পেরেছেন গত বুধবার (০৯ জুলাই) দুপুর তিনটার একটু আগে সুজানগরের নন্দিতা সিনেমা হল রোড এলাকায় বিএনপির নামধারী কতিপয় সন্ত্রাসীরা আগ্নেয়াস্ত্র, চাইনিজ কুড়াল, চাপাতি দিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটায়। যা বিএনপির দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। তা তিনি তাৎক্ষণিক তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা কার্যকর করেছেন। এবং ভালোভাবে তদন্ত করতে ও শান্তি শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে ঘটনাস্থলে তিন সদস্যের টিম পাঠিয়েছেন। আমরা এলাকায় এসে জনগণের মতামত গ্রহণ করেছি। এবং প্রশাসনের নিকট  অভিযুক্তদের বিরুদ্ধর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে জোর দাবি জানিয়েছি। অপরাধীদের কোন ক্ষমা নেই। অপরাধী যেই হোক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে বলেছি। শাস্তি কার্যকর করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, যাদের বহিষ্কার করা হয়েছে তারা যদি আদালতের মাধ্যমে নির্দোষ প্রমানিত হয় তাহলে বহিষ্কার তুলে নেওয়ার বিষয়ে দল বিবেচনা করবে। সংবাদে যেটা উল্লেখ করা হয়েছে যাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে তাতেই প্রমাণিত হয়েছে কারা জড়িত ঘটনার সঙ্গে বলে যোগ করেন তিনি।

এর আগে দুপুর ১২ টার দিকে ঢাকা থেকে তদন্ত করতে সুজানগরে বিএনপির তিন সদস্যের দল আসেন। সুজানগর বাজারের নন্দিতা সিনেমা হল এলাকার বাসিন্দাদের থেকে তথ্য সংগ্রহ করেন। এছাড়াও বাজারের আশপাশের কয়েকটি এলাকায় গিয়ে তথ্য সরবরাহ করেন তারা। সাধারণ মানুষ ও নেতাকর্মীদের কাছে থাকা গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ভিডিও ও ছবি সংগ্রহ করেন। অস্ত্র হাতে কয়েকটি ছবি ভাইরাল হয়েছে ওসব ছবিও সংগ্রহ করেন তারা। এরপর সুজানগর থানা ও সার্কেল অফিসের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সুজানগর ডাক বাংলোর অডিটোরিয়ামে কয়েক ঘন্টা ব্যাপী জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠান শেষ করে সাংবাদিকদের সংক্ষিপ্ত ব্রিফ করেন। এছাড়াও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে লিখিত অভিযোগ দেন বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম আলিম।

কেন্দ্রীয় বিএনপির তথ্য সেলের সদস্য মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা তারেক রহমানের নির্দেশনায় এখানে আসছিলাম। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে কার্পণ্য না করেন। কারও ভয় পেয়ে যেন প্রকৃত দোষী যেন ছাড় পেয়ে না যায়। সেই বিষয়ে ওসি সাহেবকে বলেছি। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে লিখিতভাবে অভিযোগগুলো থানায় দিয়ে আসছি।

সুজানগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবর রহমান বলেন, শুক্রবার বিকেল থেকে সন্ধা পর্যন্ত বিএনপির প্রতিনিধি দল ও পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গ বৈঠক করা হয়েছে। মামলার বিষয়টি পক্রিয়াধীন রয়েছে। শনিবার আপনাদের আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে পারব। তবেই আপনাদের আমি প্রকৃত মামলার বাদী ও আসামীদের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে পারব।

এর আগে ফোনে কথা বলাকে কেন্দ্র করে গত মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সুজানগর উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মজিবর খাঁয়ের অনুসারী আশিকের ফোন কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলেন উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুর রউফ শেখের ভাতিজা ছাত্রদল নেতা কাউছার ও তার অনুসারীরা। এরপর এ ঘটনা মীমাংসা হলেও বুধবার দুপুরে আশিককে সিনেমা হলের সামনে আবার ডাকে কাউছার ও তার দল। এ সময় তাদের সঙ্গে দেখা করতে আশিক তার চাচাতো ভাই ছাত্রদল নেতা সবুজকে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে কাওছার ও আশিকের মধ্যে কথা কাটাকাটি হলে সবুজ বাধা দিতে গেলে তাকেও ছুরিকাঘাত করা হয়।

এরপর মজিবর খা, লেবু খা, মানিক সহ দলবদ্ধভাবে এসে কাউছারদের ওপর হামলা চালান। এ সময় আব্দুর রউফ ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয়পক্ষকে থামাতে গেলে তাকেও কুপিয়ে ও মারধর করে আহত করা হয়। এ সময় গোলাগুলির ঘটনাও ঘটে। আহত উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিবকে মুমূর্ষ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে বিএনপির সদস্য সচিব সহ ১০ জনকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় বিএনপি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ