চলতি মাসেও প্রথম ২৩ দিনেই নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নারী-শিশুসহ অন্তত তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল সোমবার ভোরে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত সোয়াদ আলী নামে সাত বছরের এক শিশু রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে মারা যায়। তার আগে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মাটিকাটা গ্রামের এক নারী নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রামেক হাসপাতালে মারা যান।
গতকাল রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে নিপাহ আক্রান্ত তিনজনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে। এর মধ্যে রামেকে মারা যাওয়া দু'জনের পরিচয় নিশ্চিত করা হলেও বাকি একজনের পরিচয় জানাতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। গত বছর এই রোগে দেশে তিনজন আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে দু'জনের মৃত্যু হয়। আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন জানান, জানুয়ারির ২৩ দিনে পাঁচজন এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
এর মধ্যে মারা গেছেন তিনজন। এ বছর নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্তের ও মৃত্যুর হার অনেক বেশি। প্রতিদিনই রোগী মিলছে। তাই সবাইকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
রামেক হাসপাতালের আইসিইউ ইনচার্জ ডা. আবু হেনা মোস্তফা কামাল জানান, গতকাল মারা যাওয়া শিশুটি ঈশ্বরদীর সানোয়ার হোসেনের ছেলে। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, শিশু সোয়াদ প্রায়ই খেজুরের রস পান করত।
রামেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, নিপাহ খুব ভয়ংকর একটি ভাইরাস। এর তেমন কোনো চিকিৎসা নেই। আমরা উপসর্গের চিকিৎসা করি। এই ভাইরাস মস্তিস্ককে এমনভাবে আক্রান্ত করে যে, রোগীকে বাঁচানো যায় না।
আইইডিসিআরের পরিচালক ড. তাহমিনা শিরিন বলেন, নিপাহ ভাইরাস আক্রান্তের অন্যতম কারণ খেজুরের কাঁচা রস। এ ছাড়া আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে এলেও এ রোগ হতে পারে। পাখি বা বাদুড়ের অর্ধ খাওয়া যে কোনো ফল খেলেও নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ হয়। তাই কাঁচা খেজুর রসের পাশাপাশি যে কোনো পাখির অর্ধ বা আংশিক খাওয়া ফল গ্রহণ থেকেও বিরত থাকতে হবে। অনেক সময় গাছের নিচে বিভিন্ন পাকা ফল পড়ে থাকে। বিশেষ করে গ্রাম এলাকায় এটি বেশি পরিমাণে দেখা যায়।
0 মন্তব্যসমূহ