সর্বশেষ

6/recent/ticker-posts

বেড়ায় গড়ে উঠেছে কুঁড়েঘর পাঠাগার’ নামে এক ব্যতিক্রমী পাঠাগার

 


ফুটপাত ধরে হাঁটলেই একটি ব্যানারে চোখ আটকে যায়। ‘কুঁড়েঘর পাঠাগার’ লেখা ব্যানারের পাশেই একটি বুক শেলফ। সেখানে সাজানো রয়েছে প্রায় ৩০০ বই। পথচারী কিংবা পার্কে হাঁটতে আসা মানুষই এখানকার পাঠক। অনেকের অবাক দৃষ্টি ছোট্ট এই পাঠাগারের দিকে।

পাবনার বেড়া পোর্ট (নৌ বন্দর) এলাকায় ‘শিক্ষার্থী সহযোগিতা সংগঠন’-এর প্রতিষ্ঠাতা মেহেরাব হোসেন জিমের উদ্যোগে ঘুরতে আসা মানুষের জন্য গড়ে উঠেছে ‘কুঁড়েঘর পাঠাগার’ নামে এক ব্যতিক্রমী পাঠাগার।

গত ১৯ নভেম্বর পাঠাগারটি উদ্বোধন করেন বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোরশেদুল ইসলাম। শিক্ষার্থী সহযোগিতা সংগঠনের এই কুঁড়েঘর পাঠাগারটি প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা রাখা হয়। পাঠাগারের বই সরবরাহ করছেন কলি প্রকাশনীর মহিউদ্দিন কলি। এই সংগঠন বিভিন্ন সময় নানা সামাজিক কাজ করে থাকে। এর আগেও সংগঠনটি ভ্যান পাঠাগার তৈরি করে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল। সংগঠনের সদস্যরা জানান, বর্তমানে ভ্যান পাঠাগারটি হাটুরিয়া নাকালিয়া এলাকার স্কুলগুলোতে পর্যায়ক্রমে ঘুরে শিক্ষার্থীদের বই পড়ার সুযোগ করে দিচ্ছে।

বন্দরে ঘুরতে আসা পাঠক ব্যাংকার মিজানুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থী সহযোগিতা সংগঠনকে ধন্যবাদ জানাই। কারণ, আমরা আসা-যাওয়ার পথে বই পড়ার সুযোগ পাই। তাদের এ উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। তাদের কাজে সহযোগিতা করার জন্য আমাদের প্রত্যেকের এগিয়ে আসা উচিত।

শিক্ষক ওমর আলী সরকার বলেন, বই হলো একটি সামাজিক দর্পণ। আমরা যদি বই না পড়ি, তাহলে পৃথিবী ও সমাজের অনেক কিছু জানার ঘাটতি থেকে যায়। সমাজের উন্নতির জন্য পাঠাগার খুবই প্রয়োজন। শিক্ষার্থী সহযোগিতা সংগঠন কুঁড়েঘর পাঠাগার স্থাপন করে সে কাজ করেছে।

বিপিন বিহারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইয়ামিন হোসেন বলে, এই পাঠাগার আমাদের মতো শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো হলো। কারণ, আমরা অনেকেই মোবাইল ফোনে আসক্ত হয়ে পড়েছি। শিক্ষার্থী সহযোগিতা সংগঠনের উদ্যোগ আমাদের খুব ভালো লেগেছে। ছুটির দিনে আমরা অবশ্যই এই পাঠাগারে বই পড়ব।

বেড়া হাই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী রেজোয়ান রাজ বলে, আমরা প্রায় শুক্রবারই বন্দরে ঘুরতে আসি। পাঠাগার হওয়ায় বেড়ানোর পাশাপাশি বইও পড়তে পারব।

শিক্ষার্থী সহযোগিতা সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মেহেরাব হোসেন জিম বলেন, আমরা সব সময়ই মানুষের জন্য ব্যতিক্রম কিছু করতে চাই। বেড়া পোর্ট এই এলাকার একটি দর্শনীয় স্থান। বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সার্বিক সহযোগিতায় এই ‘কুঁড়েঘর পাঠাগার’ করা হয়েছে। আশা করি, পাঠাগারটি আশপাশের মানুষ দেখেশুনে রাখবে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কুঁড়েঘর পাঠাগার স্থায়ীভাবে নির্মাণ করা হবে।

বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোরশেদুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থী সহযোগিতা সংগঠন বরাবরের মতো এবারও বেড়া পোর্ট এলাকায় ব্যতিক্রমী একটি ভ্রাম্যমাণ পাঠাগার স্থাপন করেছে। এখানে ভ্রাম্যমাণ পাঠাগার স্থাপন করায় বিকেলে এবং ছুটির দিনে নদীর পাড়ে নির্মল পরিবেশে মানুষ বই পড়ার সুযোগ পাবে। উপজেলা প্রশাসন সাধ্যমতো তাদের পাশে সব সময় আছে। তারা সব সময় উদ্ভাবনী কাজ করে। আমরা লক্ষ্য করেছি, শিক্ষার্থী সহযোগিতা সংগঠনটি সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনা করে সুন্দর সুন্দর উদ্যোগ ও বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছে।  

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ