সর্বশেষ

6/recent/ticker-posts

পাবনায় বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে এইচএসসি পরীক্ষা দিল ছেলে

ফাইল- ছবি

পাবনায় বাবার লাশ বাড়িতে রেখে এইচএসসি পরীক্ষায় বসতে হয়েছে ইয়াছিন আরাফাত নামের এক শিক্ষার্থীকে।

সোমবার সকাল ১০টার আগে চোখ মুছতে মুছতে পরীক্ষা কেন্দ্রে যায় ওই শিক্ষার্থী। সহপাঠী ও কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সহযোগিতায় তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি বিষয়ের পরীক্ষায় অংশ নেয় সে। পরে পরীক্ষা শেষে বাড়িতে ফিরে বাবার লাশ দাফনে অংশ নেয়।

ইয়াছিন আরাফাত পাবনা জেলার সুজানগর পৌর শহরের এনএ কলেজের মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী। তার বাবার নাম আব্দুর রশিদ সরদার (৬২)। ৫ ভাইবোনের মধ্যে ইয়াছিত আরাফাত চতুর্থ সন্তান। তার বাড়ি সুজানগর পৌর শহরের চর-সুজানগর গ্রামে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, আব্দুর রশিদ সরদার রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করেন। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে রাত ১টার দিকে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান। মৃত্যুর পর বাবাহারা ইয়াছিন মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। পরে স্বজন ও শিক্ষকদের উৎসাহে সে উপজেলার সাতবাড়ীয়া ডিগ্রি কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে অংশগ্রহণ করে। ৫ নম্বর কক্ষে পরীক্ষা দেয় সে।

এদিন দুপুর ২টায় জানাজা শেষে স্থানীয় পৌরসভার চরভবানীপুর কবরস্থানে তার বাবার লাশ দাফন করা হয়। এনএ কলেজের অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন বলেন, ইয়াছিন আরাফাত বাবার মৃত্যুর শোক ভুলে সোমবার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে পরীক্ষায় অংশ নেয়।

পরীক্ষা শেষে ইয়াছিন আরাফাত বলে- বাবা আমাকে অনেক ভালোবাসতেন। বাবা চাইতেন আমি যেন পড়ালেখা করে অনেক বড় হই। তাই এমন অবস্থায়ও আমি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি।

সাতবাড়ীয়া ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব ও উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মনোয়ার হোসেন বলেন, ইয়াছিন আরাফাত অন্য সব পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে সোমবার পরীক্ষা দিয়েছে। আমরা তার সার্বক্ষণিক খেয়াল রেখেছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর রাশেদুজ্জামান রাশেদ বলেন, বাবাকে হারানো যে কারো জন্য খুবই কষ্টের ব্যাপার। তারপরও এইচএসসি পরীক্ষার্থী ইয়াছিন আরাফাত বাবা হারানোর কষ্ট নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। সে যেন সব পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে এবং ভালোভাবে পরীক্ষা দিতে পারে সেজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোঁজখবর রাখা হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ