মনসুর আলম খোকন, সাঁথিয়া প্রতিনিধি: পাবনার সাঁথিয়ায় অপহরণের ৫ ঘন্টা পর অপহৃত হেলাল উদ্দিন প্রামাণিককে (৩৮) উদ্ধার করেছে পুলিশ। হেলাল উদ্দিন প্রামানিক উপজেলার চরভদ্রকোলা গ্রামের বিল্লাল প্রামানিকের ছেলে ও নন্দনপুর ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সহ-সভাপতি এবং পাবনা জেলা ট্যাঙ্কলরি ও কভারভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের শ্রমিক।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শ্রমিকনেতা হেলাল উদ্দিন গত ২ এপ্রিল বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলযোগে উপজেলার মাঝগ্রাম চারমাথা করিমের চায়ের দোকানে শাহিনের সাথে চা পান করে। চা পান শেষে মোটরসাইকেলে উঠে বাড়ি যাবার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়ার সময় ডাঙ্গা মাজগ্রামের কুরবান আলীর ছেলে আমিরুল ইসলাম (৩৫) তার মোটরসাইকেল গতিরোধ করে চাবি কেড়ে নেয়। এসময় একই গ্রামের কিয়ামুদ্দিনের ছেলে ইউনুস, বারুর ছেলে মহম আরও অজ্ঞাত ৫/৬ জন মোটরসাইকেলযোগে এসে হেলাল উদ্দিনকে জিম্মি করে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ধাতালপুর গ্রামের ক্যানেল পাড়ে নিয়ে যায়।
ভিকটিম হেলাল উদ্দিনকে মারধর করে টাকা দাবি করে এবং তার কাছে থাকা নগদ টাকা মোবাইল, মানিব্যাগ, মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নেয়। সেই সাথে তার বাড়িতে ফোন দিয়ে বলতে বলে ৪ লাখ টাকা নিয়ে এসে তোকে উদ্ধার করে নিয়ে যেতে বল। এই সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে তার পরিবারের লোকজন ৯৯৯ নাম্বারে কল করে জানায়। তারপর থানা থেকে অভিযুক্ত আমিরুলের মোবাইল ফোনে একটি কল আসে। তখন আমিরুল বাহিনী অপহৃত হেলালকে রসুলপুর রায়বাড়ির সামনে বড় পুকুর পাড়ে নিয়ে এসে উপজেলা যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব আবু সাঈদের কাছে কল করে বলে কোথায় নিয়ে আসবো? তখন সাইদ বলে মিয়াপুর গরুহাটে আবুলের চায়ের দোকানে নিয়ে আয়। এদিকে অপহৃত হেলালকে উদ্ধার করতে এএসআই রাশেদ সাবেক যুবদল নেতা আবু সাঈদকে কল করলে তখন সাঈদ পুলিশকে তার বাড়িতে আসতে বলে। সেখানে থেকে পুলিশ অপহৃত হেলাল উদ্দিনকে উদ্ধার করে।
এ ব্যাপারে সাঁথিয়া থানায় হেলাল উদ্দিন তিনজনের নামসহ অজ্ঞাত ৭/৮ জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ভিকটিমের মা আছিয়া খাতুন জানান, আমার বাড়ির উপর প্রায় সময় এসে আমিরুল বিভিন্ন প্রকার ভয়-ভীতি দেখায়। আমার ছেলে হেলাল উদ্দিনের কাছে কোন টাকাপয়সা তারা পাবে না। তবে ছোট ছেলে দুলালের কাছে পাবে কিনা সেটা আমি বলতে পারবো না। আমি আইনের কাছে আমার ছেলের নিরাপত্তা চাই, ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে মুঠোফোনে অভিযুক্ত আমিরুলের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার ব্যবহৃত ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
সাঁথিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ সাইদুর রহমান জানান, আমরা সেদিন খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে ভিকটিমকে উদ্ধার করি। এ ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

0 মন্তব্যসমূহ