সর্বশেষ

6/recent/ticker-posts

বাসে সাহসী পদক্ষেপ, হাইওয়ে পুলিশ সম্মাননা পেলেন পাবনার মেয়ে রুধী

 


গত ১২ তারিখ সকালে পাবনার মেয়ে সাইফুন নেছা রুধী বাসে করে পাবনা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পাশের সিটে ১৬ থেকে ১৭ বছর বয়সী একটি মেয়ে বসেছে। মেয়েটি বাসে উঠার পর থেকেই ভিডিও কলে একটি ছেলের সাথে বারবার কথা বলতেছিল এবং যেহেতু কানে হেডফোন ছিল না তাই তার আশেপাশের সব কথা শোনা যাচ্ছিল। 

সাইফুন নেছা রুধী এবং বাসের অন্যান্য প্যাসেঞ্জাররা বুঝতে পারে যে মেয়েটা বাসা থেকে পালিয়ে যাচ্ছে। তো মেয়েটিকে বার বার প্রশ্ন করে ছেলেটির নাম্বার নিয়ে ছেলেটির সাথে কথা বলে রুধী। ওই ছেলেটির সাথে কথা বলে ছেলেটার ইনটেনশন ভালো না বলে মনে হয় রুধীর নিকট। তখন রুধী ও বাসের অন্যান্য প্যাসেঞ্জার মেয়েটিকে জোর করে বাস থেকে নামতে বলে এবং বলে যে বাসায় ফোন দিতে, কিন্তু মেয়েটি কোনভাবেই রাজি না হওয়ায় রুধী তার এক বন্ধু পুলিশ অফিসারকে ফোন দেয়। 

সেই পুলিশ অফিসার আতাইকুলা থানার ওসি হওয়ায় সে রুধীকে জানায় যে, বাস যেভাবে যাচ্ছে যাক। সে সামনের এলেঙ্গার কোন একজন অফিসারকে ফোন দিয়ে বাসটিকে থামানোর ব্যবস্থা করবে। যখন এলেঙ্গা পার হয়ে টাঙ্গাইল শহরে পৌঁছে বাসটি তখন হাইওয়ে পুলিশের কিছু কর্মকর্তা বাসটিকে থামায়। পরে রুধীসহ আরো দুইজন প্যাসেঞ্জার এবং মেয়েটিকে বাস থেকে নামানো হয়। সেই সাথে অন্যান্য প্যাসেঞ্জারের স্টেটমেন্ট নেওয়া হয়। 

এরপরে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় মেয়েটিকে, তখন তদন্ত করে জানা যায় মেয়েটি বিবাহিত এবং তার একটি ১৪ মাসের বাচ্চা আছে। সে তার স্বামী এবং বাচ্চাকে  ছেড়ে বাড়ি থেকে টাকা চুরি করে পালাচ্ছিল। যখন পুলিশ সদস্যরা সেই সব কিছু জানতে পারে এবং মেয়েটির স্বামীকে ফোন করে তার বাবা-মাসহ পাবনা থেকে যেতে বলা হয় টাঙ্গাইল শহরে। 

পরবর্তীতে হাইওয়ে পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রুধীকে ফোন দিয়ে জানায়, একদিন হাইওয়ে পুলিশের হেড কোয়ার্টারে তাকে যেতে হবে। কারন তাকে সম্মাননা দেওয়া হবে। তারই প্রেক্ষিতে ১৮ মার্চ রুধীর পরিবারের সবাই হাইওয়ে পুলিশ হেড কোয়ার্টারে যায় এবং সেখানে রুধীকে ফুলের শুভেচ্ছা ও সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

দেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে দ্বায়িত্বশীল আচরনের কারনে সাইফুন নেছা রুধীকে এই সম্মাননা প্রদান করা হয় বলে জানায় হাইওয়ে পুলিশ হেড কোয়ার্টার।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ