।। এবিএম ফজলুর রহমান।।
আজ (৩ অক্টোবর) মফস্বল সাংবাদিকতার অন্যতম পথিকৃত ও পাবনা প্রেসক্লাব এবং বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতির প্রয়াত সভাপতি অধুনালুপ্ত দৈনিক বাংলার সিনিয়র ষ্টাফ রিপোর্টার মীর্জা শামসুল ইসলামের ২৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। পাবনা প্রেসক্লাব বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক স্মরণসভার আয়োজন করেছে। মরহুম মীর্জা শামসুল ইসলাম প্রায় অর্ধশত বছরের সাংবাদিকতায় সাহসী ও বস্তনিষ্ট সংবাদ, প্রতিবেদন ও প্রবন্ধের মধ্য দিয়ে মফস্বল সাংবাদিকতাকে উচ্চস্তরে নিয়ে যান। ক্ষুরধার লিখনীর মধ্য দিয়ে তিনি সারা দেশে ব্যাপক খ্যাতিও অর্জন করেন। ১৯৬০ সালে শিক্ষা জীবন থেকে শুরু হয় তার সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি হলেও সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহন করেন ১৯৬৪ সালে। সে সময় তৎকালীন দৈনিক বাংলা পত্রিকার প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে অবলুপ্তি পর্যন্ত এ পত্রিকায় সুনামের সাথে পেশাগত দায়িত্ব পালন করেন। বিশেষ করে ৭০ এর দশকে দৈনিক বাংলায় তার পাবনা মানসিক হাসপাতাল, মানসিক রোগ এবং সেখানকার রোগীদের জীবনভিত্তিক প্রায় দুইশ পর্বের বিশাল এক ধারাবাহিক মানবিক প্রতিবেদন সারা দেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। ১৯৬৭ সালে পাবনার ভূট্টা আন্দোলন, ৮০র দশকে পাবনার ১৯ পর্বের মাদক পরিক্রমাসহ তার বিভিন্ন্ সাহসী ও বস্তনিষ্ঠ প্রতিবেদন এবং ফিচার তাকে সারা দেশে পরিচিত করে তোলে। বিশেষ করে যে কোন বিষয় ভিত্তিক সংবাদ ও ফিচার তৈরির দক্ষতা এ প্রজন্মের সাংবাদিকদের জন্য অনুকরনীয়।
পেশাগত দক্ষতার স্বকৃতি স্বরুপ ১৯৭২ সালে দৈনিক বাংলা কতৃপক্ষ মফস্বল শহরে এবং পাবনায় প্রথম তাকে ষ্টাফ রিপোর্টার হিসেবে পদোন্নতি দেন। ১৯৭৬ সালে তিনি সিনিয়র ষ্টাফ রিপোর্টার হন। সে সময় থেকে তিনি সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহন করেন। এ ছাড়া ৭০ এ দশকে বাংলাদেশ বেতার এরপর মৃত্যর আগ পর্যন্ত প্রায় ২৫ বছর বাংলাদেশ টেলিভিশনে সাংবাদিকতা করেছেণ। ১৯৬৮ সালে তিনি সাপ্তাহিক প্রবাহ নামে পাবনা থেকে একটি জাতীয় মান সম্মত পত্রিকা প্রকাশ করেণ। তার সম্পাদনায় এ পত্রিকাটি ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত প্রকাশিত হয়। ১৯৯১ সাল থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
এ ছাড়া কৃষিতে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৮৩ সালে তিনি রাষ্ট্রপতি স্বর্নপদক ও ১৯৮৫ সালে বার্ড পুরস্কারে ভুষিত হন।
মরহুম মীর্জা শামসুল ইসলাম ১৯৪৪ সালের ১৪ জুলাই পাবনার বেড়া উপজেলার আমিনপুর গ্রামে সম্ভ্রান্ত মীর্জা পরিবারে জন্ম গ্রহন করেণ। তিনি ১৯৯৯ সালের ৩ অক্টোবর ইন্তেকাল করেণ। তার মেঝ ছেলে উৎপল মির্জা পাবনা প্রেসক্লাবের সাবেক সম্পাদক ও মাছরাঙা টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি ও উত্তরাঞ্চলীয় ব্যুরো প্রধান। এ ছাড়া অন্যান্য সন্তানগন স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। পাবনা প্রেসক্লাব বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক স্মরণসভার আয়োজন করেছে।
লেখক : এবিএম ফজলুর রহমান, সভাপতি, পাবনা প্রেসক্লাব। স্টাফ রির্পোটার দৈনিক সমকাল, পাবনা।
0 মন্তব্যসমূহ