একটি জাতীয় দৈনিকের বরাত দিয়ে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর পাবনার সাঁথিয়ায় সেই মাকে ঘরে তুলে নিল বৃদ্ধার ছেলে শাহ আলম। বৃদ্ধা শাহিদা খাতুন উপজেলার ধোপাদহ ইউনিয়নের চকমধুপুর গ্রামের প্রয়াত মোকছেদ আলম মাস্টারের স্ত্রী। সাঁথিয়া থানার পুলিশের সহযোগিতায় এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে চার দিন পর শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে স্বামীর বসতভিটায় ঠাঁই হয় বৃদ্ধা শাহিদা খাতুনের। বর্তমানে মা ও ছেলে একসঙ্গে বসবাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
গত ১৭ অক্টোবর একটি জাতীয় দৈনিকের বরাত দিয়ে ‘সাঁথিয়ায় বৃদ্ধা মাকে বাড়িতে ঢুকতে দিচ্ছে না ছেলে’ শিরোনামে নিউজ পাবনায় একটি সংবাদ প্রকাশ হলে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসে। জানা গেছে, স্বামীর মৃত্যুর পর বেশিরভাগ সময় তিনি তার মেয়ে মাহফুজা খাতুনের বাড়িতে থাকতেন। গত ১৫ অক্টোবর (মঙ্গলবার) বিকেলে যখন বৃদ্ধা শাহিদা খাতুন (৬৭) নিজ বাড়িতে ফেরার চেষ্টা করেন। তখন বাড়িতে ঢুকতে দিচ্ছিলেন না তার একমাত্র ছেলে শাহ আলম, ছেলের বউ ও নাতিরা। গত চার দিন তিনি বাড়ির বাইরে অবস্থান করছিলেন এবং বাড়ির সামনে বসে কাঁদছিলেন।
বৃদ্ধা শাহিদা খাতুন বলেন, ‘ছেলে আমাকে মেনে নিয়েছে, আমিও ছেলেকে ক্ষমা করে দিয়েছি। এখন থেকে যতদিন বেঁচে থাকবো, ততদিন ছেলের কাছে এবং স্বামীর ভিটাতেই থাকব, আর কোথাও যাব না।’
বৃদ্ধার মেয়ে মাহফুজা খাতুন বলেন, আমার মায়ের সঙ্গে ভাইয়ের ভূল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে এবং আমার মা এখন থেকে তার ছেলের কাছে থাকবে। এতে আমরা অনেক খুশি।
বৃদ্ধার ছেলে শাহ আলম বলেন, আমার বোনের প্রলোভনে পড়ে মা আমাকে জমি না দিয়ে বোনকে লিখে দিয়েছিলেন এবং আমাকে জেল খাটিয়েছিলেন। সেই কারণে মাকে বাড়িতে উঠতে দিচ্ছিলাম না। আমি আমার ভূল বুঝতে পারছি। এখন থেকে আমার মা আমার কাছেই থাকবে।
সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান বলেন, বৃদ্ধা শাহিদা খাতুনের মেয়ে মাহফুজা খাতুন থানায় অভিযোগ করেছিলেন, তার ভাই শাহ আলম মাকে বাড়িতে উঠতে দিচ্ছে না। এর ভিত্তিতে তদন্ত করে মা ও ছেলের মধ্যে আপোষ করে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে ওই বৃদ্ধাকে বাড়ি তুলে দিয়ে তার ছেলের হেফাজতে রাখা হয়েছে। এখন থেকে মা তার ছেলের কাছে থাকবে এবং ছেলেও তার মাকে কাছেই রাখবে।
0 মন্তব্যসমূহ