সর্বশেষ

6/recent/ticker-posts

ভাঙ্গুড়ায় গোপনে মাদ্রাসা সুপারের পকেট কমিটি গঠন

 



ভাঙ্গুড়া প্রতিনিধিঃ পাবনার ভাঙ্গুড়ায় পূর্ব নির্ধারিত ব্যক্তি সভাপতির আসনে রেখে এবং তার সাথে যোগসাজশে গোপনে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটি গঠনের অভিযোগসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে এক মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ওই মাদ্রাসা সুপারের নাম মো. জাকির হোসেন। তিনি মাগুড়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার। 


স্থানীয়দের অভিযোগ, সুপার মো. জাকির হোসেন তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের নামের বিভিন্ন প্রার্থীর নিকট থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সেই টাকা ফেরত ও নিয়মিত মাদ্রাসায় না আসার ঝামেলা এড়াতেই তিনি সুকৌশলে পূর্ব নির্ধারিত নিজের মনোনীত ব্যক্তিকে সভাপতি করে কারো সাথে আলোচনা ছাড়াই পকেট কমিটি গঠন করেছেন। 


বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মধ্যে হাতাশ ও চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তাদের দাবী, অনতিবিলম্বে ওই পকেট কমিটি বাতিল করে মাদ্রাসার স্বার্থ রক্ষা হয় এমন ব্যক্তিদের নিয়ে নতুন কমিটি করা করা হোক। নতুন কমিটি গঠনের খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ওই সুপারকে পাননি। ঘটনার প্রতিকার চেয়ে গ্রামবাসীর পক্ষে মাসুদ রানা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।


জানা গেছে, মাগুড়া মাদ্রাসার সুপার মো. জাকির হোসেন ২০২৩ সালের শেষের দিকে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ৩ জন কর্মচারী নিয়োগ দেন। সে সময় ওই তিন জন ছাড়াও একাধিক প্রার্থীর নিকট থেকে চাকুরী দেওয়ার কথা দিয়ে অর্থ গ্রহণ করেন। সেই টাকা ও পদ নিয়ে ভাগাভাগির দ্বন্দে তৎকালীন সভাপতির সাথে হাতাহাতির মতো ঘটনাও ঘটেছিল। সে সময়ে একে অন্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়ে ছিলেন। মূলত তখন থেকেই সাবেক সভাপতির সাথে সুপার জাকির হোসেন এর দুরত্ব বাড়তে  থাকে।


যে কারণে ওই কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তরিঘড়ি করে নিজের পছন্দমত ব্যক্তিকে সভাপতি আসনে বসিয়ে পকেট কমিটি করে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবরে আবেদন করেন সুপার মো. জাকির হোসেন। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের পক্ষে একজন উপ রেজিষ্ট্রার স্বাক্ষরিত এক পত্রে সুপার জাকির হোসেনের ওই কমিটি অনুমোদন দেন। তবে কমিটি অনুমোদনের ওই চিঠিতে উল্লেখ থাকে যে, মাদ্রাসার স্বার্থ পরিপন্থি কর্মকান্ডের জন্য প্রবিধান ২০০৯ এর সংশ্লিষ্ঠ প্রবিধান এ কমিটি যে কোনো সময় বাতিল করা হবে। 


এদিকে সুপার জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য, নিয়মিত মাদ্রাসাতে না এসে দিনে পর দিন কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত থাকে নিয়মিত বেতন ভাতা উত্তলোন করা, বিভিন্ন ব্যক্তিকে কথা দিয়ে কথা না রাখাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়দের দাবী, এই পকেট কমিটি বহাল থাকলে মাদ্রাসার শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশসহ প্রতিষ্ঠানের যথাথ স্বার্থ রক্ষা হবে না। তাই অবিলম্বে সুপার জাকির হোসেনের পকেট কমিটি বাতিল করে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে সভাপতি  করে নতুন কমিটি গঠনের জোর দাবী জানিয়েছেন।


এ ব্যপারে সুপার মো. জাকির হোসেন এর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।


ঘটনার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ নাজমুন নাহার বলেন, কমিটির অনুমোদন দিয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড, কমিটি বাতিলের এখতিয়ারও শিক্ষা বোর্ডের। ভুক্তভোগীরা কমিটি বাতিলের জন্য বোর্ডে আবেদন করতে পারেন। অন্যান্য অভিযোগের বিষয়ে তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কমিটি গঠনের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।


ঘটনার বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ গোলাম হাসনইন রাসেল বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ