সর্বশেষ

6/recent/ticker-posts

ভাঙ্গুড়ায় ছেলেকে আটকের খবর দিয়ে মায়ের নিকট থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা নেওয়ার চেষ্টা!


 

ভাঙ্গুড়া প্রতিনিধিঃ পাবনার ভাঙ্গুড়ায় অনিক (২০) নামের এক শিক্ষককের ছেলেকে আটকের ভয় দেখিয়ে তার মা সালমা বেগমের নিকট থেকে মোবাইল ফোনে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছেন দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার (০২ জুলাই) বেলা ১১ টার দিকে অপরিচিত ০১৭৮৬৬৪৮২৩৭ নাম্বার থেকে ফোন কল আসে অনিকের মা সালমা বেগমের নাম্বারে । 

ফোন কল রিসিভ করতেই অপর প্রান্ত থেকে গম্ভীর কণ্ঠে জানায় তার ছেলে অনিককে আটক করা হয়েছে। ছাড়িয়ে নিতে চাইলে অতিদ্রুত ৫০ হাজার টাকার ব্যবস্থা করতে হবে । এ সময় বিপরীত দিক থেকে ফোনে আরও বলেন অতি দ্রুত ৫০ হাজার টাকা আমাদের না দিলে আপনার ছেলের ভীষণ সমস্যা হবে।  অনিক নৌবাড়ীয়া  এলাকার বাসিন্দা ও মৃত বাবুর ছেলে। সে মমতাজ মোস্তফা আইডিয়াল স্কুলে  চাকরি করে। 


অনিকের মা সালমা বেগম বলেন, আমি এক আত্মীয়র বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছি এমত অবস্থায় মঙ্গলবার বেলা ১১ টার দিকে একটা অপরিচিত নাম্বার থেকে আমার ব্যবহৃত মোবাইলে কল আসে। মোবাইল ফোন রিসিভ করতেই অপর প্রান্ত থেকে কণ্ঠে জানতে চায় আপনি কি অনিকের আম্মু। আপনার ছেলে চাকরি করে কিন্তু এই মুহূর্তে আপনার ছেলে আমাদের কাছে জিম্মি  আছে। অতি দ্রুত ৫০ হাজার টাকার ব্যবস্থা করেন না হলে আপনার ছেলে খুব অবস্থা খারাপ হবে। 


অপরিচিত নম্বর থেকে ফোনের মাধ্যমে এমন কথা শোনার পরে অনিকের মা সালমা অনেকটাই বিব্রত ও বিচলিত হয়ে পড়েন। এরপর আপনারা কারা জানতে চাইলে তারা নিজেদেরকে ডিবি পুলিশের লোক  পরিচয় দিয়ে বলেন, অতি দ্রুত টাকার ব্যবস্থা করেন। মাঝে মাঝে ছেলের কান্নার স্বর মোবাইল ফোনে শুনান। 


এমন অবস্থা শুনে সালমা বেগম অনেকটাই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। একপর্যায়ে অনিকের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তারা অনিককে ফোন দিতে রাজি হননি। এভাবে প্রায় ১৫ মিনিট ধরে  প্রতারক চক্রের কথা শোনার পর ফোন কেটে অনিককে ফোন দিয়ে মা জানতে পারেন অনিক তার  প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন এবং ভালো রয়েছেন। বিষয়টা নিয়ে তিনি বিচলিত হয়ে তাৎক্ষণিক স্কুলে ছুটে আসেন এবং অনিকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় মমতাজ মোস্তফা আইডিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষক আলহাজ্ব আব্দুল হাকিম  ও অনিককে ডেকে একসঙ্গে নিয়ে ঘটনার আদ্যপান্ত খুলে বলেন। 


প্রসঙ্গত, কয়েক বছর আগে অনিকের পিতা বাবুর মৃত্যুর পর তার মা সালমা দুই সন্তানকে নিয়ে নৌবাড়ীয়া এলাকায় বসবাস করে আসছেন। অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোনের মাধ্যমে  হঠাৎ ছেলে সম্পর্কে এমন কথা শুনে তিনি বিচলিত হয়ে পড়েন। 


ঘটনার বিষয়ে মমতাজ মোস্তফা আইডিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষক আলহাজ্ব আব্দুল হাকিম বলেন, এরা এক ধরনের প্রতারক চক্র এদের কথায় বিভ্রান্ত হবার কোন কারণ নেই। সবাই সচেতন হলে প্রতারক চক্র কিছুই করতে পারবে না।  


অনিকের মা সালমা বলেন, স্বামীর মৃত্যুর পর দুই সন্তান নিয়ে নৌবাড়িয়া এলাকায় স্বামীর ভিটায় বসবাস করি। হঠাৎ মোবাইল ফোনে বড় ছেলে সম্পর্কে  এমন এমন কথা শুনে বড়ই বিচলিত ও চিন্তা বোধ হচ্ছে। জানি না ভবিষ্যতে কোন দুর্ঘটনা ঘটে কিনা। 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ