পাবনা প্রতিনিধিঃ পাবনার বেড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটি নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরী হয়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার বর্ধিত সভায় আমন্ত্রণকে কেন্দ্র করে এই উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সম্পাদককে সেই বিতর্ক আবারো নতুন করে আলোচনায় এসেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তর্কে জড়িয়েছেন তৃণমূল কর্মীরাও।
জানা যায়, ২০২২ সালের ২৯ মে পাবনার বেড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকুর অনুসারীদের বিরুদ্ধে সঠিকভাবে কাউন্সিলের তালিকা না করার অভিযোগ করেন উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, সম্পাদকের অনুসারী বড় একটি অংশ।
বিতর্কের মুখে ঐ সম্মেলনে প্রধান অতিথিসহ গুরুত্বপূর্ণ নেতারা অনুপস্থিত ছিলেন। এক পর্যায়ে জেলা আওয়ামীলীগ সম্মেলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিলেও বর্তমান ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু এমপির উপস্থিতিতে তার অনুসারীরা সম্মেলন করে টুকু এমপির ছেলে, বেড়া পৌর মেয়র আসিফ শামস রঞ্জনকে সভাপতি ও প্রভাষক আবু সাইদকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে কমিটি করেন।
জেলার সভাপতি রেজাউল রহিম লাল ও সাধারণ সম্পাদক খন্দকার গোলাম ফারুক প্রিন্সের অনুপস্থিতিতে ঐ সম্মেলন ও কমিটিকে অনুমোদন করেনি জেলা আওয়ামীলীগ।
এর আগে ২০১৪ সালের ২৯ নভেম্বর বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওই সম্মেলনে বেড়া পৌরসভার তৎকালীন মেয়র আবদুল বাতেন সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান আবদুল কাদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন।
২০২০ সালের ১৪ এপ্রিল আবদুল বাতেনকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে অনিল কুমার সাহা ও পরবর্তীতে অধ্যাপক ওয়াজেদ আলীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয়।
একই বছরের ১০ সেপ্টেম্বর করোনায় আবদুল কাদের মারা গেলে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান আব্দুর রশিদ দুলাল।
২০২২ সালের সম্মেলনের এক বছরের বেশী সময় পেরিয়ে গেলেও বেড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের নতুন কমিটি অনুমোদন করেনি জেলা আওয়ামীলীগ। এদিকে নতুন, পুরানো উভয় কমিটিই নিজেদের বৈধ সভাপতি, সম্পাদক দাবি করে আসছিলেন।
৬ আগস্ট অনুষ্ঠেয় দলীয় সভানেত্রীর সারাদেশের তৃণমূল নেতাদের সাথে বিশেষ বর্ধিত সভায় উভয় কমিটির সভাপতি সম্পাদক আমন্ত্রণপত্র ও প্রবেশকার্ড পাওয়ায় আবারো সামনে এসেছে সেই আলোচনা। উভয় কমিটিই নিজেদের বৈধ দাবি করেছেন।
আমন্ত্রণ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে বেড়া উপাজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আব্দুর রশীদ দুলাল বলেন, বর্ধিত সভা উপলক্ষ্যে কেন্দ্র থেকে প্রতিটি উপজেলার সভাপতি, সম্পাদকের তালিকা চাওয়া হয়।জেলা আওয়ামীলীগ আমাদের নাম কেন্দ্রে পাঠানোর পর কেন্দ্র তা অনুমোদন করে আমাদের আমন্ত্রণপত্র ইস্যু করেছে। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আমরাই বৈধ কমিটি।
অপরদিকে ২০২২ সালের সম্মেলনে নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক আবু সাইদও আমন্ত্রণ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, কেন্দ্রের নেতারা আমাদের সম্মেলন করে নেতা বানিয়েছেন। আমরাই বৈধ কমিটি। অন্য কোন কমিটি এই উপজেলায় নাই। আগের কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, সম্পাদকের আমন্ত্রণ বিষয়ে আমার জানা নাই।
পাবনা জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকখন্দকার গোলাম ফারুক প্রিন্স এমপি বলেন, বেড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের নতুন কোন কমিটি অনুমোদন হয়নি। কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা তালিকায় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওয়াজেদ আলী ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশীদ দুলালের নাম পাঠিয়েছি। কেন্দ্র তা অনুমোদন করে আমন্ত্রণ পত্র ইস্যু করেছে। অন্যরা কিভাবে আমন্ত্রণ পেয়েছেন আমার জানা নেই। দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশনা নিয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে জেলা আওয়ামীলীগ।
0 মন্তব্যসমূহ