মোঃ নূরুল ইসলাম, চাটমোহর, পাবনা : পাবনার চাটমোহর উপজেলার বিলচলন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আকতার হোসেন, ইউপি সদস্য ও চাটমোহর উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সুরুজ আলী, দোদারিয়া গ্রামের রিপন হোসেন ও মহাজের গ্রামের আজমত আলীসহ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের দোদারিয়া চৌরাস্তা ও বওশা চৌরাস্তার মধ্যবর্তী (চাটমোহর-মান্নান নগর) সড়কের দুইটি ব্রীজের মুখে বাঁধ দিয়ে প্রায় ৮০০ বিঘা ফসলী মাঠে জোড় পূর্বক মাছ চাষের অভিযোগ উঠেছে।
গত কয়েক বছর যাবত রাস্তাটির পশ্চিমাংশের ফসলী মাঠে এভাবে বাঁধ দিয়ে তিনি ও তার কয়েকজন সহযোগি মাছ চাষ করায় প্রতি বছর মাঠের আমন ধান ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এই ফসলী মাঠে মাছ চাষের লক্ষ্যে এবারও তারা বাঁশ, বাঁশের তালাই, পলিথিন, বালির বস্তা ও বাদাই জাল দিয়ে বাঁধ দিয়েছেন। অবৈধ ভাবে ব্রীজের মুখে বাঁধ নির্মাণ করে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে মাছ চাষ বন্ধে এলাকার প্রায় ৫০ জন কৃষক গত ১০ জুলাই চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করলেও অজ্ঞাত কারণে এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ নেয়নি উপজেলা প্রশাসন।
এলাবাসীর সাথে কথা বলে ও লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কোন প্রকার সরকারী জলাশয় লীজ না নিয়ে মানুষের ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে তারা জোড় করে এ ভাবে মাছ চাষ করছেন। গত ৭ ও ৮ জুলাই শুক্রবার ও শনিবার দুইটি ব্রীজের মুখ তারা বাঁধ দিয়ে আটকে দিয়েছেন। এতে বর্ষার পানি চলাচল ব্যহত হচ্ছে। আট’শ বিঘা জমির আমন ধান নষ্ট হচ্ছে। ব্যক্তি স্বার্থে জমির মালিকদের মতামত উপেক্ষা করে ব্রীজের মুখে বাঁধ দেওয়ায় ক্ষোভে ফুসছেন এলাকাবাসী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে।
চরসেন গ্রামের আবু জাফর, মনিরুল ইসলাম, কালাম ফকির, জেলহক, তফিজ উদ্দিনসহ অন্যান্য কৃষক জানান, ব্রীজের মুখে বাঁধ দেওয়ায় গুমানী নদী থেকে সেনগ্রামের খাল হয়ে এ মাঠে পানি প্রবেশে বাঁধা সৃষ্টি হচ্ছে। ইতিমধ্যে মাঠে বর্ষার পানি প্রবেশ করেছে। বর্ষার শেষ দিকে পানি নিষ্কাশনে সমস্যা হবে। রবি শস্য আবাদ বিলম্বিত হবে। ব্রীজের নিচ দিয়ে নৌকা চলাচল বন্ধ রয়েছে। এলাকার কয়েকশত মানুষের জমির আমন ধান বিনষ্ট হচ্ছে। বাঁধ দুটি বহাল থাকলে এলাকার মানুষের আনুমানিক প্রায় ৮০০ বিঘা জমির আমন ধান নষ্ট হয়ে যাবে।
সামগ্রীক ফসল উৎপাদন কমে যাবে। তাই এলাকার কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় অতি দ্রুত বাঁধ দুটি অপসারণে আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করলেও এখন পর্যন্ত তিনি কোন পদক্ষেপ নেননি। বাঁধ দুটি অপসারণে ভূক্তভোগী কৃষকেরা অতি দ্রুত জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য সুরুজ আলী জানান, আমরা কয়েকটি সাইট খাল লীজ নিয়েছি। বর্ষা শেষে বোরো জমিতে কচুরী পানা থাকতো। পরিষ্কার করতে কৃষকের কষ্ট হতো, খরচ হতো। তাই মাছ চাষ করি।
বিলচলন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আকতার হোসেন জানান, এলাকার কয়েকজন মাছ চাষের সাথে জড়িত। এ ব্যাপারে আমার সংশ্লিষ্টতা নেই।
0 মন্তব্যসমূহ