ভাঙ্গুড়া প্রতিনিধি: পাবনার ভাঙ্গুড়ায় গ্রাম্য সালিশে মাসুদ হোসেন (২১) নামে এক ধর্ষককে ৬৫ হাজার টাকা জরিমানা করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের বেতুয়ান পূর্বপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত মাসুদ ওই গ্রামের গোলাম নবীর উদ্দিনের ছেলে ও বিবি স্কুল এন্ড কলেজের ১ম বর্ষের ছাত্র। এ ঘটনায় এলাকায় চাউর হলে আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠে।
সূত্র জানায়, মাসুদ হোসেন কলেজে আসা যাওয়ার পথে একই এলাকার চালাপাড়া গ্রামের জনৈক ব্যক্তির ১৬ বছর বয়সী ১০ম শ্রেণির ছাত্রীকে ফুঁসলিয়ে বিয়ের প্রলোভনে প্রেমের সম্পর্ক করেন। সেই সম্পর্কের সূত্র ধরে বিবাহের প্রলোভনে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে অভিযুক্ত মাসুদ একাধিকবার তাকে ধর্ষণ করেন। পরে মাসুদকে ওই মেয়ে বিবাহের জন্য চাপ দিতে থাকে।
কিন্তু মাসুদ নানান তালবাহানা করতে থাকে এবং মেয়েকে এড়িয়ে যান। এমতাবস্থায় গত ১৪ জুলাই বেলা ১১টার দিকে ওই মেয়ে নিজেই মাসুদ এর বাড়িতে গিয়ে হাজির হন। সেখানে মাসুদ এর বাড়িতে পর পর তিন দিন অবস্থান করে বিবাহের দাবী নিয়ে অনশন করতে থাকে। তরুনীর অনশনের ঘটনা এলাকায় চাউর হলে আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠে। কিন্তু ওই তরুনী মাসুদের বাড়িতে ওঠার পর পর কৌশলে মাসুদ গা ঢাকা দেন।
এদিকে মাসুদকে তিন দিন বাড়িতে না পেয়ে ওই তরুনীর পরিবার থানায় মামলা করার উদ্যোগ নিলেও ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় ইউপি সদস্যদ্বয় মিলে মামলা না করতে নিষেধ করেন বলে ভুক্তভোগী পরিবার জানান।
এ ঘটনায় দিলপাশার ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নানের নেতৃত্বে স্থানীয় ইউপি সদস্য আক্কাস আলী ও আরজু খান এবং সাবেক ইউপি সদস্য আঃ হান্নান এর উপস্থিতিতে অভিযুক্ত মাসুদকে ৬৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। ৬৫ হাজার জরিমানা আদায় করা হলেও ভুক্তভোগী পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই পরিবার। এরপর ইউপি সদস্য আক্কাস আলী ও আরজু খান মিলে মেয়েকে তার বেতুয়ান চালাপাড়া গ্রামের বাবার বাড়িতে রেখে আসেন।
ঘটনার বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবার ৫০ হাজার টাকা পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আমরা অসহায় তাই আমাদের আর কোনো উপায় ছিল না।
এ বিষয়ে ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আক্কাস আলী জানান, বিষয়টি নিয়ে একটা মীমাংসা হয়েছে। তবে তিনি ইউপি চোয়ারম্যান আব্দুল হান্নান এর সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন।
এ বিষয়ে ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আরজু খান জানান, সমস্যা একটা হয়েছিল যার সমাধান হয়েছে। তবে কি সমাধান হয়েছে তা তিনি বলেন নি। তবে তিনিও ইউপি চোয়ারম্যান আব্দুল হান্নান এর সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন।
এ বিষয়ে জানতে দিলপাশার ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নানের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি জানান, ছেলে মেয়ের বিষয়ে একটা প্যালাসাইটিং সমাধান হয়েছে এবং স্বাক্ষাতে বিস্তারিত জানানো হবে।
এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) মিজানুর রহমান জানান, এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
0 মন্তব্যসমূহ