পাবনার সুজানগর পৌর সদরের চর সুজানগর মহল্লার বাসিন্দা আশিকুর রহমান পাপ্পু হেলিকপ্টারে করে নতুন বউ আনছেন এমন খবরে এলাকায় রীতিমতো হইচই পরে যায়।
শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে একটি হেলিকপ্টারে চড়ে সুজানগর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এসে হাজির হন বর আশিকুর রহমান পাপ্পু। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন দাদা জবানী সরদারসহ পরিবারের কয়েকজন সদস্য।
আশিকুর রহমান পাপ্পু ওই এলাকার ফজলুর রহমানের ছেলে। পেশায় বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার। ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। আর কনে নুসরাত জাহান জীম গাজীপুরের বাসিন্দা টুটুল শেখের মেয়ে। তিনি একটি মাদরাসার শিক্ষার্থী।
হেলিকপ্টারে নতুন বউ আসছে- এমন খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে আত্মীয়-স্বজন, নারী, শিশুসহ নানা বয়সী উৎসুক মানুষ আগে থেকেই ভিড় জমান বিদ্যালয় মাঠে। বর-কনে হেলিকপ্টার থেকে নামার পর তাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে বরণ করে নেন বরপক্ষের স্বজনরা। পরে তাদের মাইক্রোবাসে করে বাড়িতে নেওয়া হয়।
ছেলের চাচা পাবনা পৌর এলাকার চর সুজানগর মহল্লার বাসিন্দা হেলাল উদ্দিন বলেন, ৬/৭ মাস আগে আমার ভাতিজা পাপ্পুর বিয়ে হয়। বিয়ের পর মেয়ে তাদের বাড়িতেই ছিল। শুক্রবার তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ছেলের বাড়িতে নিয়ে আসা হলো। হেলিকপ্টারে করে বউ আনার বিষয়ে আমরা খুব আনন্দিত।
বর-কনেকে বরণ করতে মাঠে উপস্থিত ছিলেন ছেলেপক্ষের আত্মীয়-স্বজনরা। এ সময় ছেলের চাচি শাহনাজ খাতুন, ভাবি অনামিকা নাসরিন ও চাচাতো বোন তুলি খাতুন বলেন, হেলিকপ্টারে করে বউ আনছে। আমরা তাদের ফুল দিয়ে বরণ করেছি। প্রথম হেলিকপ্টারে বউ আনার ঘটনা দেখতে পেরে আমরা খুব খুশি।
এ বিষয়ে বর আশিকুর রহমান পাপ্পু বলেন, আমি যখন খুব ছোট ছিলাম, তখন থেকেই আমার দাদার খুব ইচ্ছা আমি যেন হেলিকপ্টারে বউ নিয়ে আসি। তার সেই শখ পূরণ করতেই মূলত এই আয়োজন। দাদার ইচ্ছা পূরণ করতে পেরে আমি খুব আনন্দিত। হেলিকপ্টারে দাদাও আমার সঙ্গে ছিলেন। পরিবারের সবার সম্মতিও ছিল হেলিকপ্টারে বিয়ে করার। সব মিলিয়ে খুব আনন্দ হয়েছে।
আশিকুর রহমান পাপ্পুর দাদা জবানী সরদার বলেন, পাপ্পু যখন ছোট ছিল তখন থেকেই বলতাম তুই বিয়ে করে হেলিকপ্টারে বউ আনবি। আমার নাত বউয়ের বাড়িও ঢাকা। চিন্তা করলাম হেলিকপ্টারে তো নিয়ে আসা যায়। নাত বউয়ের সাথেও আলাপ করলাম তোকে হেলিকপ্টারে নিয়ে আসবো। শুনে সেও খুব খুশি হয়। এভাবেই হেলিকপ্টারে নাতি ও তার বউকে নিয়ে আসলাম।
সুজানগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হান্নান বলেন, হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ের আয়োজনের খবর জেনে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। উৎসুক লোকজনের ভিড়ে যেন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেছে।
সুজানগর পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম রেজা বলেন, ব্যতিক্রমী এ আয়োজন দেখার জন্য পাইলট মডেল স্কুলে হাজারো মানুষের ভিড় দেখা গেছে। খুব দারুণ একটি আয়োজন ছিল।
0 মন্তব্যসমূহ