পাবনার সুজানগরে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার সুজানগর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মনোমুগ্ধকর এ খেলার আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন।
এ খেলাকে ঘিরে স্থানীয়দের মাঝে ছিল উৎসবের আমেজ। কালের ক্রমে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী এ প্রাচীন লাঠি খেলা দেখতে ভিড় করেন নানা বয়সের মানুষ। ঢাক-ঢোল আর কাঁসার ঘণ্টার শব্দে চারপাশ উৎসব মুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। বাদ্যের তালে নেচে নেচে লাঠি খেলে অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করে লাঠিয়ালরা। তার পর পরই চলে লাঠির কসরত। প্রতিপক্ষের লাঠির আঘাত থেকে নিজেকে রক্ষা ও তাকে আঘাত করতে ঝাঁপিয়ে পড়েন লাঠিয়ালরা। এসব দৃশ্য দেখে আগত দর্শকরাও করতালির মাধ্যমে উৎসাহ যোগায় খেলোয়ারদের।
এ সময় হারিয়ে যাওয়া এই ঐতিহ্য বাঁচিয়ে রাখতে সরকারি পৃষ্টপোষকতার মাধ্যমে নিয়মিত এ ধরণের আয়োজন করার দাবি করেন দর্শকরা। লাঠি খেলার সময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রওশন আলী, পৌর মেয়র রেজাউল করিম, থানার ওসি আব্দুল হান্নান, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মিনহাজুল ইসলাম, উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রাফিউল ইসলাম, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আব্দুল মজিদ, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল হাই, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএম সামছুল আলম, সুজানগর প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহজাহান আলী প্রমুখ।
খেলা দেখতে আসা মাসুমা আক্তার নামের এক দর্শক বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য যে কত সুন্দর এ খেলা না দেখলে বোঝা যাবেনা। লাঠি খেলা খুবই উপভোগ করেছি। এ খেলার আয়োজন করার জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান তিনি।
লাঠিয়াল সর্দার মসলেম বিশ্বাস জানান, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দর্শনার্থীদের বাড়তি আনন্দ ও বিনোদন জোগাতে আমরা লাঠি খেলা দেখাই। তাদের আনন্দে আমরাও আনন্দিত হই। এ খেলা আমাদের পূর্ব-পুরুষের। আমাদের সন্তানদের এ খেলা শিখিয়েছি। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী এ খেলাটি টিকে থাকবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রওশন আলী জানান, মানুষদের মাঝে কিছুটা বিনোদন ও হারানো ঐতিহ্য ধরে রাখতেই এ খেলার আয়োজন করা হয়।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীন জানান, কালের বিবর্তনে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা আজ বিলুপ্তির পথে। নতুন প্রজন্মের কাছ থেকে যেন খেলাটি হারিয়ে না যায় সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
0 মন্তব্যসমূহ