সর্বশেষ

6/recent/ticker-posts

বেড়ায় আইসোলেশনে রোগী ভর্তি- পালাল অন্য রোগীরা

বেড়া, প্রতিনিধি : পাবনার বেড়া উপজেলায় করোনাভাইরাসের কিছু উপসর্গ থাকা এক যুবককে (২৬) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি করা হয় শনিবার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যার দিকে।

এ খবর জানাজানি হতেই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি থাকা ৪০ জন রোগীর মধ্যে ৩১ জন তাৎক্ষণিকভাবে পালিয়ে যায়।

এর পর আজ (২৯ মার্চ) দুপুরের মধ্যে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে আরও আটজন রোগী চলে যাওয়ায় এখন সেখানে মাত্র তিনজন রোগী রয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

এদিকে ওই যুবকের করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দেওয়ার পর তিনদিন পেরিয়ে গেলেও তাঁর নমুনা পরীক্ষার জন্য আইইডিসিআর থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।

গত শুক্রবার (২৭ মার্চ) ওই যুবক আইসোলেশনে নেওয়ার পর থেকেই বেড়া উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নমুনা পরীক্ষার জন্য আইডিসিআরসহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে জানিয়ে আসছে বলে জানা গেছে।

বেড়া উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ওই যুবক শরীরে জ্বর, গলাব্যাথ্যা নিয়ে বুধবার (২৫ মার্চ) উপজেলার নাটিয়াবাড়িতে অবস্থিত শ্বশুর বাড়িতে আসেন।

তাঁর শ্বশুর বাড়ির লোকজন দরিদ্র ও ঘনবসতিপূর্ণ পরিবেশে বাস করেন। ওই যুবক ট্রেনে হকারি করতেন। তাঁর অসুস্থ হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানান।

এতে বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসিফ আনাম সিদ্দিকী এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সরদার মো. মিলন মাহমুদ গত (২৭ মার্চ) সেখানে যান।

সবকিছু দেখে ও পরিস্থিতি বিবেচনা করে তাঁরা ওই যুবককে ওইদিন দুপুর ১২টার দিকে জেলা পরিষদের একটি (কাশিনাথপুরে অবস্থিত) ডাকবাংলোতে আইসোলেশনে রাখেন। পাশাপাশি ওই যুবকের শ্বশুরবাড়ির ১৬ জন সদস্যকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়।

ওই যুবককে আইসোলেশনে রাখা ডাকবাংলোটির অবস্থান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে। অন্যদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও ইতিমধ্যে করোনাভাইরাসের রোগীদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে আট শয্যার একটি আইসোলেশন ইউনিট।

এই ইউনিটটি সাধারণ রোগীদের ওয়ার্ড থেকে নিরাপদ দূরত্বে সম্পূর্ণ আলাদা একটি ভবনের তৃতীয় তলায় অবস্থিত।

শনিবার (২৯ মার্চ) সন্ধ্যার দিকে ইউএনও এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ওই যুবককে ডাকবাংলো থেকে নিয়ে এসে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি করেন।

তাঁকে ভর্তির কথা জানাজানি হতেই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়া সাধারণ রোগীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। ওই সময় নারী ও পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন ৪০ জন রোগী।

তাঁদের মধ্যে ৩১ জন রোগীই এক থেকে দেড় ঘন্টার মধ্যে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ছেড়ে চলে যান।
পরে রোববার (২৯ মার্চ) সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে হাসপাতাল ছেড়ে যান আরও আটজন রোগী।

দুপুরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায় নারী ও পুরুষ ওয়ার্ড মিলিয়ে মাত্র তিনজন রোগী রয়েছেন। আলাপকালে তাঁরাও বিকালের মধ্যেই হাসপাতাল ছেড়ে যাবেন বলে জানান।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সরদার মোঃ মিলন মাহমুদ বলেন, ওই রোগীকে নিরাপদ দূরত্বে আলাদা ভবনে আইসোলেশনে ইউনিটে রাখা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে সাধারণ রোগীদের ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই।

তা সত্ত্বেও সাধারণ ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া অনেক রোগীই চলে গেছেন। বিষয়টি দুঃখজনক। আমরা অসুস্থ যুবককে চিকিৎসা দিচ্ছি। তাঁর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তাঁর নমুনা পরীক্ষার ব্যাপারে আমরা ঢাকায় যোগাযোগ করে যাচ্ছি।

ইউএনও আসিফ আনাম সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা সার্বক্ষণিক ওই রোগীর ব্যাপারে খোঁজ রাখছি। তাঁর নমুনা পরীক্ষার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও ঢাকায় যোগাযোগ করা হচ্ছে।’

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ