সর্বশেষ

6/recent/ticker-posts

পাবনায় মৃত ব্যক্তির নামে বালু উত্তোলনের অভিযোগে মামলা!

 


পাবনার সুজানগরে বালু উত্তোলনের অভিযোগে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১০/১২ জনের নামে মামলা দায়ের করেছেন সুজানগর পৌর ভূমি অফিসের ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (নায়েব) বাবুল আক্তার। এতে প্রধান আসামি করা হয়েছে কাদের মণ্ডলকে। যিনি ৮ বছর আগে মারা গেছেন।


ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, কোনো প্রকার যাছাই-বাছাই না করেই নিজের ইচ্ছেমতো মামলা দায়ের করেছেন নায়েব বাবুল আক্তার। এতে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চান ভুক্তভোগীরা। তবে বিষয়টিকে সামান্য ভুল দাবি করে গাফিলতি বলতে নারাজ সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।


অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সুজানগর পৌর এলাকার চর ভবানীপুর এলাকায় পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলনের অভিযোগে মামলাটি দায়ের করা হয়। এতে প্রধান আসামি করা হয় মৃত কাদের মণ্ডলকে। দ্বিতীয় আসামি করা হয়েছে কাদের মণ্ডলের বড় ভাই দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ৮৫ বছরের বৃদ্ধ শুকুর মন্ডলকে। এছাড়াও এই মামলায় যাদেরকে আসামি করা হয়েছে তাদের অনেকেই বালু ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নয় বলে জানা গেছে। মামলায় যাদের সাক্ষী করা হয়েছে তারাও মামলা সম্পর্কে কিছুই অবগত নন।


মৃত কাদের মণ্ডলের স্ত্রী আসমা খাতুন বলেন, প্রায় ৮ বছর আগে আমার স্বামী মারা গেছেন। ৩ সন্তানকে নিয়ে অসহায়ভাবে বসবাস করছি। এর মধ্যেই হঠাৎ করে গত পরশুদিন শুনলাম আমার স্বামীকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে করা মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে। একজন মৃত মানুষ কীভাবে বালু উত্তোলন করতে পারে? এজন্য যারা দায়ী তাদের শাস্তি চাই।


কাদের মণ্ডলের বড় ভাই মামলার দ্বিতীয় আসামি বয়োবৃদ্ধ শকুর মন্ডল বলেন, আমি ভালোভাবে চলাফেরাই করতে পারি না। আমার বয়স ৮৫ বছর। বালু কীভাবে কোথায় কারা উত্তোলন করে কিছুই জানি না। অথচ আমার মৃত ছোট ভাই ও আমাকে আসামি করা হয়েছে।


মামলার প্রধান সাক্ষী ইকবাল সরদার বলেন, আমি মামলার বিষয়ে কিছুই জানি না। পরে শুনলাম আমাকে নাকি সাক্ষী করা হয়েছে। আর আসামি করা হয়েছে মৃত ও অসুস্থ ব্যক্তিদের। আমরা এলাকাবাসী মামলার আসামিদের নাম শুনে অবাক হয়েছি। যাদের নাম শুনেছি তারা অনেকেই নিরীহ সাধারণ মানুষ।


এ বিষয়ে অভিযুক্ত ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (নায়েব) বাবুল আক্তার বলেন, বালু উত্তোলন কারা করছে তা আমি সরাসরি দেখিনি। ওই এলাকার মানুষদের কাছ থেকে শুনে মামলা করেছি। পরে মামলা সংশোধন করতে থানায় আবেদন করেছি।


সুজানগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দিন বলেন, নায়েব সাহেব যেভাবে এজাহার দিয়েছেন সেভাবেই আমরা মামলা হিসেবে গ্রহণ করেছি। এখন কেউ যদি মৃত বা অসুস্থ থাকে তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে পরে বাদ দেওয়া হবে।


বিষয়টিকে গাফিলতি বলতে নারাজ সুজানগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুখময় সরকার। তিনি বলেন, এতে গাফিলতির কিছু নেই। যাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে নায়েব সাহেব মামলাটি করেছিল তারা ভুল তথ্য দিয়েছিল। পরে জানা গেছে উনি মৃত। এতে গাফিলতির কিছু নেই। যারা অভিযুক্ত নয় তাদের নাম চার্জশিট থেকে বাদ যাবে।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ