পাবনা প্রতিনিধি : পাবনার ঈশ্বরদীতে রিকশাচালক মামুন হোসেনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করার দায়ে অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা পৌর কাউন্সিলর কামাল উদ্দিন ও ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি হৃদয় হোসেনকে শনিবার (০৭ জানুয়ারি) আদালতের মাধ্যমে পাবনা জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি তাদের অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছে পুলিশ।
এদিকে অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবিতে ঈশ্বরদী থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী। শনিবার সন্ধ্যায় শহরের পিয়ারাখালী এলাকার শত শত মানুষ ও নিহত রিকশাচালকের পরিবারের সদস্যরা থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন। এ সময় তারা হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
থানার মূল গেটের সামনে বিক্ষোভকারীরা বলেন, রিকশাচালক হওয়া কোনো অপরাধ নয়। প্রকাশ্যে নির্মমভাবে একজন মানুষকে গুলি করে হত্যা করে কোনো সন্ত্রাসী যেন পার পেতে না পারে। আমরা চাই খুনি আনোয়ার উদ্দিন ও তার ভাই কামাল উদ্দিনসহ সব অপরাধীর ফাঁসি হোক।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী পারভেজ হোসেন বলেন, 'শত শত মানুষের সামনে সন্ত্রাসী আনোয়ার পকেট থেকে পিস্তল বের করে গুলি করে মামুনকে হত্যা করেছে। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।'
মামুনের বাবা মনির হোসেন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, 'আমার ছেলে কী দোষ করেছিল- যে তাকে অকালে এভাবে প্রাণ দিতে হলো? আমার ছেলেকে যারা হত্যা করেছে তাদের ফাঁসি চাই।'
মামুনের মা লিপি আক্তার বলেন, 'আমার ছেলে রিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। যারা আমার ছেলেকে হত্যা করল, আমি বেঁচে থাকা অবস্থায় তাদের ফাঁসি দেখতে চাই।' তিনি বলেন, এ কেমন দেশ যেখানে সবার সামনে নিরপরাধ একজন মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়?
থানা ঘেরাও ও বিক্ষোভ চলাকালে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার এলাকাবাসীকে অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত করার আশ্বাস দিলে তারা থানা চত্বর থেকে ফিরে যান।
ওসি জানান, শনিবার ওই দুই আসামিকে আদালতের মাধ্যমে পাবনা জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি তাদের অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। আসামি আনোয়ারকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে হত্যা মামলা থেকে তিন আসামি কামাল, আনোয়ার ও হৃদয়কে অব্যাহতি এবং গ্রেপ্তার দু'জনের মুক্তির দাবি জানিয়ে শনিবার সকালে পাবনা-৪ আসনের এমপি নুরুজ্জামান বিশ্বাস ও ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র ইছাহাক আলীর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন তাদের স্বজনরা। গত বুধবার মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়।
0 মন্তব্যসমূহ