সর্বশেষ

6/recent/ticker-posts

ঈশ্বরদীতে বড় ভাই’র নির্দেশে রিকশাচালককে গুলি করে ছোট ভাই- র‌্যাব

 


পাবনার ঈশ্বরদীতে তুচ্ছ ঘটনায় গুলি করে রিকশাচালক মামুন হোসেনকে হত্যার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ২ আসামীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১২) পাবনার একটি দল।

শুক্রবার (০৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় পাবনা র‌্যাবের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লীডার মোঃ তৌহিদুল মবিন খান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, ঈশ্বরদী ইপিজেডেরে কর্মীবাহী একটি করিমন (ভটভুটি) ও লেগুনার মধ্যে দুর্ঘটনা এবং জরিমানা নিয়ে তর্কাতর্কিতে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিপক্ষের ওপর হামলা ও গুলি করার নির্দেশ দেন পাবনার ঈশ্বরদী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামাল উদ্দিন। 

তার নির্দেশ পেয়েই ঘটনাস্থলে গিয়ে মামুনকে সরাসরি গুলি চালান কামালের ভাই আনোয়ার উদ্দিন। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন রিকশাচালক মামুন হোসেন। 

এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে রকি হোসেন ও সুমন হোসেন নামে আরও দুজন আহত হন। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রধান আসামি কামাল উদ্দিন (৪৮) ও তার সহযোগী মো. হৃদয়কে (২৪) গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

গ্রেপ্তারকৃত কামাল উদ্দিন ঈশ্বরদীর শৈলপাড়া ১২ কোয়ার্টারের বাসিন্দা মৃত নূর উদ্দিনের ছেলে এবং মো. হৃদয় একই এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে। কামাল উদ্দিন ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি এবং হৃদয় একই ওয়ার্ডের ছাত্রলীগের সভাপতি। তবে ঘটনার মূল অভিযুক্ত ওয়ার্ড যুবলীগের সদস্য আনোয়ার হোসেন এখনও পলাতক রয়েছে।

র‌্যাব জানায়, মূলত ভটভুটি ও লেগুনার মধ্যে দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত হয়। সেই ঘটনায় কামাল উদ্দিন ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিপক্ষের ওপর হামলা ও গুলির নির্দেশ দেন। তার নির্দেশের পর ঘটনাস্থলে গিয়ে তার ভাই আনোয়ার হোসেন কোমরে থাকা পিস্তল বের করে মামুন ও রকিকে গুলি করেন। এসময় আনোয়ারের সঙ্গীরা সুমনকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।

গ্রেপ্তারকৃত কামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে রেলের তেল চুরিসহ একাধিক মামলা রয়েছে। হৃদয়ও একাধিক মামলার আসামি। তাদেরকে ঈশ্বরদী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আর আনোয়ারসহ বাকি অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে উল্লেখ্য করেছেন তারা।

প্রসঙ্গত, গত বুধবার ৪ জানুয়ারি রাত ৯টার দিকে ঈশ্বরদী রেল গেটের পাশে কাচারীপাড়ায় ঈশ্বরদী ইপিজেড থেকে আসা দ্রুততগামী ভটভুটি ও লেগুনা সংঘর্ষ হয়। এসময় রিকশাচালক মামুনসহ স্থানীয়রা চালকদের বেপরোয়া গতিতে চলাচলে নিষেধ করে। এঘটনায় লেগুনা চালক ভটভুটির চালকের কাছে ক্ষতিপূরণ চাওয়া নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে বিতর্ক হয়।

পরে ফিরে গিয়ে লেগুনার মালিক কামাল ও আনোয়ারকে জানালে তারা ক্ষুব্ধ হন এবং আনোয়ার হোসেন তার দলবল নিয়ে স্থানীয়দের ওপর চড়াও হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হলে আনোয়ার তার কোমরে থাকা পিস্তল বের করে সেখানে থাকা মামুন ও রকিকে গুলি করে এবং সুমনকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। 

পরে স্থানীয়রা তিনজনকে উদ্ধার করে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মামুনকে মৃত ঘোষণা করেন এবং গুলিবিদ্ধ রকি ও ছুরিকাঘাতে আহত সুমনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

এ ঘটনায় ৫ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার রাতে নিহত মামুন হোসেনের মা লিপি খাতুন বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ্য ও অজ্ঞাত কয়েকজনের নামে ঈশ্বরদী থানায় মামলা করেন। মামলাটিতে কামাল উদ্দিনকে প্রধান আসামি ও তার সহকারী আনোয়ার হোসেনকে দুই নম্বর আসামি করা হয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ