পাবনায় দিনদুপুরে প্রকাশ্যে দুই শিশু শিক্ষার্থীকে অপহরণের চেষ্টা করেছে তিন দুর্বৃত্ত। শিশুদের চিৎকারে স্থানীয় দোকানদার ও পথচারীরা এগিলে আসলে শিশু দুটিকে নিয়ে যেতে ব্যর্থ হয় তারা। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা অপহরণকারী চক্রের এক সদস্যকে আটক করে পুলিশে দেন।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে পাবনা শহরের রায়বাহাদুর গেটের কাছে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, আটক অপহরণকারীর নাম জিহাদ হোসেন (২৬)। তিনি পাবনা সদর উপজেলার জহিরপুর গ্রামের আ. মজিদের ছেলে। তিনি তার অপর দুই সহযোগীর নাম-পরিচয় জানিয়েছেন। তবে পুলিশ তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম বলতে অপারগতা প্রকাশ করে। এরা সবাই পেশায় রংমিস্ত্রি বলে পুলিশ জানায়।
পাবনা জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. হুজ্জাতুল্লাহ ঘটনার সতত্যা নিশ্চিত করে বলেন, আমার স্কুলের ৩য় শ্রেণির দুই শিশু স্কুল থেকে ছুটির পর বাড়িতে যাচ্ছিল। তারা জিলা স্কুলের অদূরে শহরের জনবহুল রায়বাহাদুর গেটের কাছে পৌঁছলে অপহরকারীরা তাদের অপহরণের চেষ্টা করে।
এক অভিভাবক জানান, তিনি তার সন্তানকে নিয়ে জিলা স্কুলে এসেছিলেন। ঘটনার সময় জনগণের শোরগোল শুনে ও জটলা দেখে রায়বাহাদুর গেটের কাছে যান। এ সময় পুলিশ খবর পেয়ে জনতার হাতে আটক অপহরণকারী দলের একজনকে নিয়ে চলে যায়।
পাবনা জিলা স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক ও সহকারী শিক্ষক ফিরোজ হোসেন বলেন, শিশুদের এক শিফটের ছুটি শেষে তারা বাড়ি যাচ্ছিল। তারা স্কুলের অদূরে রায় বাহাদুর গেটের কাছে পৌঁছানোর পর তিন যুবক তাদের ধরে মোটরসাইকেলে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় তারা শিশুদের বলেন- ‘তোদের বাবারা মাদক খায়। আমরা তাদের কাছে টাকা পাই। তোরা আমাদের সঙ্গে চল, তাহলে তোদের বাবারা টাকা দিয়ে দেবে।’
এ সময় দুই শিশু চিৎকার শুরু করলে পাশের ওয়াল্টন শো-রুমের কর্মচারী, ক্রেতাসহ পথচারীরা দ্রুত এসে অপহরণকারীদের ঘিরে ধরার চেষ্টা করলে দুজন মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। কিন্তু একজন জনতার হাতে ধরা পড়েন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে জিলা স্কুলের অন্যান্য ছাত্র-শিক্ষক ও পাবনা সদর থানার পুলিশ সদস্যরা হাজির হন।
পরে পুলিশ ওই দুই ছাত্রকে শিক্ষকদের জিম্মায় দিয়ে অপহরণকারী দলের সদস্যকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
ঘটনাস্থলে যাওয়া পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) ডেভিড হিমাদ্রি বলেন, আমরা জনতার কাছ থেকে এক অপহরণকারীকে আটক করে থানায় নিয়ে এসেছি। আটক ওই যুবক পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, তারা দলে তিনজন ছিলেন। তারা পেশায় রংমিস্ত্রি বলে দাবি করেছেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল শিশুদের আটক করে অভিভাবকের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করা। আটক অপহরণকারী তার দুই সহযোগীর নাম পুলিশকে জানিয়েছে।
পাবনা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম বলেন, বিকাল ৫টা পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। আটক যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার দেওয়া তথ্য যাচাই করে দেখা হচ্ছে।
0 মন্তব্যসমূহ