সর্বশেষ

6/recent/ticker-posts

পাবনায় আলোচিত হত্যা মামলার ২ আসামী অস্ত্রসহ গ্রেফতার

 



আরিফ খান, বেড়া-সাঁথিয়া, পাবনাঃ পাবনার  বেড়া পৌর এলাকার আলহেরা নগরী এলাকায় ইমরান (২২) নামের এক যুবকের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে বেড়া মডেল থানা পুলিশ। 


২৮ মার্চ সোমবার  নিহত ইমরান হত্যার মামলার দুই আসামিকে আটক করেছে বেড়া মডেল থানা পুলিশ। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি ছুরি ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকার কথা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আসামী দুইজন।  


থানা সূত্রে জানা যায়, নিতত ইমরানের বাবা মোঃ আব্দুল কুদ্দুস বাদী হয়ে ২৮ মার্চ বেড়া থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।  এসআই (নিরস্ত্র) মোঃ জুবাইদুল ইসলাম মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিযুক্ত হন। 

হত্যাকান্ডের বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পাবনার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান বিপিএম, সার্বক্ষনিক মনিটরিং করেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বেড়া সার্কেল), জেলা গোয়েন্দা শাখা, পাবনার নির্দেশনা ও সহযোগীতায়, অফিসার-ইনচার্জ অরবিন্দ সরকার, এসআই মোঃ জুবাইদুল ইসলাম, এসআই মোঃ ফারুক সরকার, এএসআই মোঃ আব্দুল মতিন, এএসআই মোঃ আনোয়ার হোসেন ও ফোর্স সহ বেড়া থানা এলাকা এবং নারায়নগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। 


ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত বেড়া পৌর এলাকার স্যানালপাড়ার মোঃ আব্দুল মাজেদ এর পুত্র মোঃ আজাদুর রহমান নবীন (২৪) ও একই এলাকার মোঃ মালেক মোল্লার ছেলে মোঃ আলাউদ্দিন (২০) কে গ্রেফতার করে। 


জিজ্ঞাসাবাদে আসামী নবীন জানায় ২০১৫ সালের আগষ্ট মাসে ইমরানসহ আরও তিনজন তার ভাই আরাফাতকে অপহরণ করে হত্যা করে। সেই মামলায় ইমরান প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর যশোর কিশোর সংশোধনাগারে থেকে ৮/৯ মাস পূর্বে বের হয়ে আসে এবং ‘কি করতে পারলি’ বলে নবীনকে তির্যক মন্তব্য করে। 


ভাই হত্যার প্রতিশোধ নিতেই নবীন কৌশলে ইমরানের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে মেয়ে কন্ঠে প্রায় তিন মাস ইমরানের সাথে প্রেমের অভিনয় করে। ২৫ মার্চ  আসামী নবীন কক্সবাজার হতে নারায়নগঞ্জে আসামী আলাউদ্দিনের নিকট আসে। পরিকল্পনা মাফিক তারা দুইজন নারায়নগঞ্জ হতে একই তারিখে বেড়া থানা এলাকায় আসে ও নিজেদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য কৌশলে বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করে এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহারের জন্য ২টি ছুরি ক্রয় করে নিজেদের কাছে রাখে। 


২৬ মার্চ রাত অনুমান সাড়ে ১১টার সময় আজাদুর রহমান নবীন পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক ইমরানকে মেয়ে কন্ঠে প্রেমিকার অভিনয় করে আলহেরা নগর এলাকায় ডেকে আনে। 


ইমরান তিনটি চিপস এর প্যাকেট নিয়ে তার কথিত প্রেমিকার বাড়ির সামনে আসতেই পূর্ব থেকে ওত পেতে থাকা নবীন এবং আলাউদ্দিন তাকে জাপটে ধরে রাস্তার পাশে ঘাসের ক্ষেতে নিয়ে রশি দিয়ে বেঁধে ফেলার চেষ্টা করে। ইমরান ছুটে যাওয়ার চেষ্টা করিলে নবীন ও আলাউদ্দিন তাদের হাতে থাকা ছুরি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে রক্তাক্ত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। 


মৃত দেহটি মাঠের মধ্যে ফেলে রেখেই আলহেরা নগর মাঠের ভিতর দিয়ে যাওয়ার সময় একটি পুকুরে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ২টি ছুরি ফেলে দিয়ে চলে যায়। গ্রেফতার পরবর্তী সময়ে আসামীদ্বয়ের দেখানো মতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ২টি ছুরি উদ্ধার করে থানা পুলিশ। 


গ্রেফতারকৃতদের ২৯ মার্চ  বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করলে আসামীদ্বয় দোষ স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করায় বিজ্ঞ আদালত আসামীদ্বয়ের প্রদত্ত জবানবন্দি ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় লিপিবদ্ধ করেন এবং জেল হাজতে প্রেরনের আদেশ দেন।


ঘটনার দিন সাঁথিয়া উপজেলার করমজা মধ্যপাড়া গ্রামের মোঃ আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে নিহত ইমরান রাত ১১টার সময়  খাওয়া দাওয়া শেষে নিজ শয়ন কক্ষে ঘুমিয়ে পড়ে। 

২৭ মার্চ তারিখ সকাল ৬টার দিকে শয়ন কক্ষে তাকে না পেয়ে বাড়ির লোকজন খোঁজা-খুজি শুরু করে। একপর্যায়ে একই তারিখ সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ইমরানের মৃতদেহ বেড়া থানার আলহেরা নগর এলাকার ঘাসের জমির মধ্যে পাওয়া যায়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ