১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তানি হানাদারেরা। পুরো জাতি মেতে ওঠে বিজয়ের আনন্দে। সেই আনন্দ থেকে তখনও কয়েক কদম দূরে ছিলেন পাবনা। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণে অস্বীকৃতি জানিয়ে পাকিস্তানি সেনারা পাবনার বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে রাখে।
পাবনার মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার বেবি ইসলাম বলেন, ‘দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বিভিন্ন স্থান থেকে আমরা (মুক্তিযোদ্ধারা) নিজ জেলা পাবনায় ঢুকে পড়লেও শহরে প্রবেশ করতে পারিনি। পাকিস্তানি বাহিনীর সদস্যরা শহরের ওয়াপদা ও ঈশ্বরদীতে অবস্থান নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবেশে বাধা দেয়। এ সময় তারা বিভিন্ন জায়গায় গাছের গুঁড়ি ফেলে রাস্তা অবরোধ করে রাখে। আমরা তাদের আত্মসমর্পণ করতে বারবার তাগিদ দিলেও পাকিস্তানি সেনারা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেনি।’
১৮ ডিসেম্বর ভারতীয় সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন নন্দা পাবনায় আসেন। পাকিস্তানিরা তাঁর কাছেই আত্মসমর্পণ করে। পরে মুক্তিযোদ্ধারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পতাকা উড়িয়ে পাবনা মুক্ত ঘোষণা করেন।
পাবনা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল ইসলাম রবি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই ২৭ মার্চ থেকে ২৯ মার্চ পাকিস্তানিরা তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়ে। সেখানে পরাজিত হয়েছিল তারা। সেই পরাজয়ের স্মৃতি ও পরবর্তী ৯ মাস ধরে চালানো গণহত্যার কারণে প্রতিশোধের ভয়ে পাকিস্তানি সেনারা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণের সাহস পায়নি।
বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের নিদর্শন হিসেবে যুদ্ধের ২৮ বছর পর ১৯৯৮ সালে কালেক্টরেট ভবনের সামনে ‘দুর্জয় পাবনা’ নামে একটি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়।

0 মন্তব্যসমূহ