সর্বশেষ

6/recent/ticker-posts

পানি সংকট, আটঘরিয়ায় পাট পচানো নিয়ে বিপাকে কৃষকেরা



মাসুদ রানা : আটঘরিয়ায় পাটের ফলন অনেক ভালো হলেও  পাট পচানো নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা। পর্যাপ্ত পানির অভাবে পাট জাগ (পচানো) দেওয়া নিয়ে চিন্তিত তারা।


জেলার বিভিন্ন স্থানে বাড়ির পুকুরে, শুকনো খাল বিলে গভীর নলকূপের পানি দিয়ে জাগ দেওয়া হচ্ছে পাট। অনেকেই আবার বাড়ির আঙ্গিনায়, জমির পাশে, রাস্তা ধারে দাড় করিয়ে রেখেছেন।


কৃষকরা জানান, পাটের ফলন ভালো হলেও এবার পানি সংকটে পাট জাগ দিতে পারছেন না তারা। বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় এবং নদ-নদীতে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় খাল-বিলসহ জলাশয় অনেকটাই পানিশূন্য। ফলে পাট জাগ দেওয়া যাচ্ছে না।

 

 জমি থেকে দূর-দূরান্তের জলাশয়ে নিয়ে পাট জাগ দিতে হচ্ছে। ফলে বেড়েছে ব্যয়। আটঘরিয়া উপজেলার শ্রীকান্তপুর  গ্রামের কৃষক আব্দুস সালাম  জানান, জোলায় পর্যাপ্ত পানি না থাকায় পাট জাগ দিতে পারছি না আমরা । 


পাটক্ষেতের আশপাশের খাল-জলাশয় সব শুকিয়ে আছে পানি নেই। এখন পাট জাগ দেওয়া নিয়ে ভীষণ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আমাদের । পাট কেটে পাতা ঝরানো হয়ে গেলেও জাগ দিতে পারছি  না। দূরে কোথাও পানি আছে শুনলেই পাট নিয়ে ছুটতে হচ্ছে আমাদের ।  


চাঁদপুর দক্ষিণ পাড়া গ্রামের ইদ্রিস আলী সরদার জানান, এবার আমার ২বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। কিন্তু পানির অভাবে পাট পঁচাতে পারছি না। তিনি আরও জানান, প্রতি বিঘা ২ হাজার টাকার বিনিময়ে অনেকেই পাট জাগ দিচ্ছে।


খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খাল-বিলসহ জলাশয়ে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় পাট পচানো নিয়ে বিপাকে পড়েছে আটঘরিয়া উপজেলার একদন্ত, লক্ষীপুর, মাজপাড়া, দেবোত্তর, 


অভিরামপুর, চাঁদভা ও আটঘরিয়া পৌরসভার বিভিন্ন এলাকার অসংখ্য কৃষক। সময় মতো পাট কেটে পঁচাতে না পারলে পাটের রং সুন্দর হবে না, ন্যায্য মূল্য না পাওয়ারও শঙ্কা রয়েছে।


পাটেশ্বর গ্রামের  কৃষক, জুলহাজ ও মতিন  বলেন, আমাদের ৫ বিঘা জমির পাট জাগ দিতে পারছি না। সুতার বিলে ও


খালে পানি নেই। পাট জাগ দিতে পারছি না। অসংখ্য কৃষক পাট জাগ দেওয়া নিয়ে চিন্তায় আছেন। বৃষ্টি নেই, বর্ষার পানিও খাল-বিলে জমেনি।


শ্রীকান্তপুর গ্রামের কৃষক জিলানির ৩ বিঘা, ইসরাঈলের ২ বিঘা, শুকুরের ১ বিঘা, ইদ্রিসের ৩ বিঘা, রাজ্জাকের ১ বিঘা, আবুল হাসেমের তিন বিঘা, শুকচাদের তিন বিঘা, 


শাজাহান এর ১ বিঘা, জালাইয়ের ১ বিঘা, সন্তেষ এর ২ বিঘাসহ  অনেকেই এবার পাট চাষ করেছেন।


উপজেলা কৃষি অফিসার সজিব আল মারুফ জানান, এ উপজেলায় চলতি মৌসুমে পাটের মোট আবাদ হয়েছে  ৫০৯৫ হেক্টর। জিরো-৫২৪-৪০৪২ হেক্টর। বিজি আর আই(তোষাপাট-৮৮৮৭ হেক্টর, মহারাষ্ট্র -১৬৬ হেক্টর) 


মাজপাড়া-৪৮০ হেক্ট, চাঁদভা-৬৩০ হেক্টর, পৌরসভা-৯৫  হেক্টর, দেবোত্তর- ১৫৫০হেক্টর, একদন্ত ১৩০০হেক্টর,লক্ষীপুর -১০৪০ হেক্টর।এ উপজেলায় পাটের  লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে  -৫১৬৫ হেক্টর। 


তিনি আরও জানান, মণ প্রতি বর্তমান  ভালো পাটের বাজার দর ২৮০০-২৯০০ টাকা। আর নিম্ন মানের পাটের দাম মণ প্রতি ২৪০০-২৫০০ টাকা। মোট কৃষকের সংখ্যা ২০৩৮০ জন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ