সর্বশেষ

6/recent/ticker-posts

ভাঙ্গুড়ায় রাতের আঁধারে সরকারি সম্পত্তির মাটি কেটে ভাটায় বিক্রি!

 


ভাঙ্গুড়া প্রতিনিধিঃ পাবনার ভাঙ্গুড়ায় (পানি উন্নয়ন বোর্ড ও গুমানি নদীর) সরকারি সম্পত্তির মাটি কেটে রাতের আঁধারে ইটের ভাটায় বিক্রিয় করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামীলীগ এক নেতার বিরুদ্ধে। 


উপজেলার অষ্ঠমনিষা ইউনিয়নের ভাঙ্গা জোলা গ্রামের ওয়াবদার বাধ সংলগ্ন গুমানী নদীর তীর এলাকায় এ ঘটনা ঘটছে। অভিযুক্ত আওয়ামীলীগ নেতার নাম মকবুল হোসেন । তিনি অষ্টমনিষা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ভাঙ্গা জোলা গ্রামের  বাসিন্দা। 


স্থানীয়দের অভিযোগ তিনি ঝবঝবিয়া গ্রামের মাটি ব্যবসায়ী সাইদুল ও আলা উদ্দীনের সহযোগিতায় প্রায় মাস খানেক ধরে  এ কাজ করছেন। তবে মাটি কাটার কথা স্বীকার করলেও  তিনি এই  কাজের সাথে জড়িত নয় বলে দাবী করেন।


সরেজমিন, বুধবার উপজেলার অষ্টমনিষা ইউনিয়নের ভাঙ্গা জোলা গুমানী নদীর তীর  দেখা গেছে, গুমানী নদীর তীর, ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সম্পত্তির মাটি কেটে নিয়েছে। এতে ওয়াবদার বাঁধে বসবাসকারী গৃহহারা ভুমিহীন ২৫ থেকে ৩০টি পরিবারের বসতবাড়ি হুমকির মুখে পড়েছে। বৃষ্টি কিংবা বর্ষার পানির স্রোতে তাদের বসতবাড়ি এক সময় ভেঙ্গে যাবে বলে জানান তারা। 


স্থানীয়রা জানান, তারা নিষেধ করলে কেউ তাদের কথায় কর্ণপাত করেন না । মাটি কাটার কাজে জড়িতদের দাবী উপর মহলের সাথে কথা বলেই এ কাজ করছেন। রাত সাড়ে ৩ টার দিকে গুমানি নদী দিয়ে শ্রমিকসহ বড় বড় মাটিবাহী নৌকা নিয়ে এসে রাতের আঁধারে নৌকায় মাটি কেটে ভরাট করে  নিয়ে পাশের ইটের ভাটায় বিক্রি করছে এই চক্রটি। এভাবে বেলা সাড়ে ৮/৯টা পর্যন্ত চলে তদের কার্যক্রম। তারা দিনে এই মাটি কাটার কাজ থেকে বিরত থাকেন। 


স্থনীয়রা আরও জানান, ঝবঝবিয়া গ্রামের মাটি ব্যবসায়ী সাইদুল ও আলা উদ্দীনসহ আরও কয়েকজন, ভাঙ্গাজোলা গ্রামের আওয়ামীলী নেতা মকবুল এই কাজের সাথে জড়িত। তারা প্রভাবশালী হওয়ায় দরিদ্রদের কথায় কর্ণপাত করেন না।


স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা আব্দুল হাই, সুজন আলী, আনোয়ার হোসেন ও আবু সাইদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরপরই প্রায় মাস খানেক ধরে ঝবঝবিয়া গ্রামের মাটি ব্যবসায়ী সাইদুল ও আলা উদ্দীনসহ আরও কয়েকজন মিলে ভাঙ্গাজোলা গ্রামের আওয়ামীলী নেতা মকবুল এই সরকারি সম্পত্তির মাটি কেটে বিক্রয় করে যাচ্ছেন। 


তারা নিষেধ করলেও তাদের কথায় মাটি কাটার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিরা কোন কর্ণপাত করেন না। তবে মাঝে মধ্যেই কেউ কেউ এসে ছবি তুলে নিয়ে যায় কিন্তু মাটি কাটার কাজ বন্ধ হয় না। সরকারি সম্পত্তির এই মাটি কোটে বিক্রি বন্ধ করতে  স্থানীয়রা  উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানিয়েছেন তারা।


স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল আজিজ বলেন, তারা ওয়াবদার বাধের জায়গাতে বাড়ি করে বসবাস করেন কিন্তু তাদের বাড়ির নিচ থেকেই যে ভাবে মাটি কাটা হচ্ছে তাতে তার বসতবাড়ি হুমকির মুখে রয়েছে। এমনভাবে মাটি কেটে বিক্রয় চলতে থাকলে বর্সকালে  তাদের বাড়ি ধসে যেতে পারে।


ঘটনার বিষয়ে অষ্টমনিষা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মকবুল বলেন, তিনি ওই এলাকার পানি উন্নয়ন বোর্ডের পাঁচ বিঘা জায়গা লিজ নিয়েছেন এবং সেখানে অন্যেরা গোপনে মাটি কেটে বিক্রয় করেন বলে তিনি স্বীকার করেন। তবে তিনি মাটি কাটা বা বিক্রির সাথে জড়িত নন। তার নাম করে কেউ সুবিধা নিতে পারেন তা তার জানা নেই বলেও দাবি করেন মকবুল।

 

বিষয়টি সর্ম্পকে জানতে পানি উন্নয়ন বোর্ড পাবনার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সারোয়ার জাহান সুজনের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার ফোন দিলেও অপর প্রান্ত থেকে তা রিসিভ না হওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।


এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ভিডিওতে দেখতে এখানে ক্লিক করুন



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ