পাবনা প্রতিনিধি : পাবনায় প্রেমের টানে বাড়ি থেকে উধাও হয়েছে সদর উপজেলার আরিফপুরের এক তরুণী ও ভাঁড়ারার এক তরুণ।
প্রেমের টানে উধাও হলেও তরুণের বাবা-মা ও মামার নামে থানায় অপহরণের অভিযোগ দিয়েছেন তরুণীর বাবা। ফলে পুলিশি হয়রানি ও গ্রেফতার আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তারা।
অভিযুক্ত তরুণ সদর উপজেলার ভাঁড়ারা ইউনিয়নের বকশপাড়া গ্রামের কৃষক রফিক হোসেনের ছেলে রনি হোসেন এবং তরুণি উর্মি আক্তার পাবনার আরিফপুরের আব্দুল জলিলের মেয়ে।
উর্মি পাবনার ইমাম গাজ্জালী স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৯ শ্রেণির ছাত্রী এবং রনি পাবনার সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছে।
জানা গেছে, আরিফপুরে উর্মির বাড়ির সঙ্গে রনির দুলাইভাইয়ের বাড়ি, সেখানে আসা-যাওয়ার সূত্রে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়।
সম্পর্ক চলাকালে গত মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) উভয় বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। বিষয়টি টের পেয়ে তাদের খুঁজতে থাকেন উভয় পরিবার। এক পর্যায়ে তাদের অবস্থান আতাইকুলায় জানতে পারেন মামা শাহিন আলম।
গত বৃহস্পতিবার তাদের উদ্ধার করে পাবনায় নিয়ে আসার পথে বন্ধুদের সহযোগিতায় আবারও পালিয়ে যায় তারা।
প্রথম দিকে থানায় নিখোঁজের জিডি করলেও দ্বিতীয়বার পালিয়ে যাওয়ায় তরুণীর বাবা বাদী হয়ে পাবনা সদর থানায় অপহরণের অভিযোগ দেন।
এতে ওই তরুণের পাশাপাশি অভিযুক্ত করা হয়েছে তরুণের বাবা ও মাকে। এছাড়াও তাদের উদ্ধারের জন্য চেষ্টায় থাকা মামা শাহিন আলমকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে।
এখন উভয়েই পুলিশি ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। মামা শাহিন আলম এলাকার গণমান্য ব্যক্তি হয়েও পুলিশি ভয়ে ঘরছাড়া।
এবিষয়ে আরিফপুরের ব্যবসায়ী শাহিন আলম বলেন, ‘আমি তো চেষ্টা করেছি তাদের উদ্ধার করতে, সফলও হয়েছিলাম। কিন্তু মাঝপথে বন্ধুদের সহযোগিতায় তারা আবারও পালিয়ে গেছে। তারপরও আমি নানাভাবে খোঁজখবর নিয়ে আবারও উদ্ধারের চেষ্টা করছি। কিন্তু মেয়ের বাবা এখন তো আমাদের বিরুদ্ধে অপহরণের দায়ে মামলা দিচ্ছে। এটাতো আমাদের মতো মানুষদের আত্মসম্মানের জন্য চরম আঘাত। এখন বার বার আমার বাড়ির ওপর পুলিশ যাচ্ছে। আমরা আত্ম-সম্মান ও আতঙ্কের মধ্যে আছি।’
এবিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তরুণীর বাবা ও মামলার বাদী বলেন, ‘আমার বাড়ির সামনে থেকে ওই ছেলে আমার মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে গেছে। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল।’
প্রেমের সম্পর্কে তারা পালিয়ে গেছে, তাহলে বাবা-মা ও মামার নামে অপহরণের মামলা হয় কি করে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অপহরণে কিভাবে করছে আমি জানি না। তারা বলল- আমার মেয়েকে উদ্ধার করে নিয়ে এসে আমার কাছে পৌঁছে দিবে। কিন্ত মাঝপথে দোহারপাড়া গ্রামের শহিদের বাড়িতে বসতে গেলে আবারও পালিয়ে যায়। এখন আমার দাবি- তারা আমার মেয়েকে অপহরণ করেছে।’
এবিষয়ে পাবনার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, ‘অভিযোগ দিয়েছে, এখনও মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়নি। এখানে হয়রানির কিছু নেই। এই ধরনের ঘটনায় যাকে ধরলে মেয়েটি উদ্ধার করা সম্ভব আমরা তাকেই ধরার চেষ্টা করছি। তারপরও আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো।’
0 মন্তব্যসমূহ